ডাকাত নয়, খুনি গৃহকৃর্তাই! এক পোশাকে অর্ধাহারে ছ’মাস ‘বন্দি’ স্ত্রী-মেয়ে
জলপাইগুড়িতে বন্ধ ঘর থেকে ব্যবসায়ীর স্ত্রী রীতা সাহা ও মেয়ে পায়েলের দেহ উদ্ধার হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ী। ডাকাতির তত্ত্ব সাজালেও এই জোড়া খুনে ক্রমশ সন্দেহ প্রকট হতে থাকে গৃহকর্তার উপর।
নির্মম, অমানবিক নির্যাতন চালানোর পরই স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করেছে ব্যবসায়ী। জলপাইগুড়িতে জোড়া খুন-কাণ্ডে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল পুলিশের হাতে। প্রতিবেশীদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, দিনের পর দিন স্ত্রীকে একই পোশাকে আটকে রাখা হয়েছিল বাড়িতে। মেয়ের উপর চালানো হত নির্যাতন। পণের দাবিতেই স্বামী অভিনন্দন সাহা এই অকথ্য অত্যাচার চালাতো বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।
প্রতিবেশীদের বয়ান অনুযায়ী বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও অভিনন্দনের স্ত্রী-র কোনও পোশাক পাওয়া যায়নি। তা থেকেই তদন্তকারীরা একমত স্ত্রীকে এক পোশাকে অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় আটকে রাখা হয়েছিল। এমনকী মা-মেয়েকে খেতে পর্যন্ত দেওয়া হত না। খাওয়া-পরার পিছনে ছিল বিস্তর কার্পণ্য। স্ত্রী বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে পারেনি বলেই অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল অভিনন্দন।
পুরো বাড়ি তল্লাশি করেও অভিনন্দনের স্ত্রী রীতা সাহার কোনও কাপড়-জামা না মেলায় তাজ্জব বনে যান। প্রতিবেশীদের মুখে প্রথমে এই অভিযোগ শুনেছিলেন তদন্তকারীরা, রীতাদেবী নাকি একটা জামা প্রায় ছ'মাস ধরে পরেছিলেন। তারপর পুলিশ তল্লাশি চলে এবং অভিনন্দনের উপর সন্দেহ বেড়ে যায় আরও।
পুলিশ কেস ফাইল ঘেঁটে জানতে পারে, অভিনন্দনকে এর আগেও একবার গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০১১ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেবার তার বিরুদ্ধে বেআইনি ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল নিউ জলপাইগুড়ি থানা পুলিশের কাছে। আর এবার স্ত্রী ও মেয়েকে খুনের অভিযোগ।
জলপাইগুড়িতে বন্ধ ঘর থেকে ব্যবসায়ীর স্ত্রী রীতা সাহা ও মেয়ে পায়েলের দেহ উদ্ধার হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ী। খাটের তলা থেকে পাওয়া যায় ব্যবসায়ীর শিশুপুত্রকে। বুধবার রাত ১টা নাগাদ ব্যবসায়ী অভিনন্দন সাহা জলের পাইপ বেয়ে দোতলা থেকে নিচে নেমে জানায় বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। তবে ডাকাত পড়ার এই গল্প বিশ্বাস করেনি পুলিশ। ঘর থেকে উদ্ধার হয় পাঁচ লক্ষ টাকাও।