"পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতি করছেন মুখ্যমন্ত্রী", রাষ্ট্রপতির সামনেই তোপ মোর্চার
দার্জিলিং, ১৪ জুলাই : ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেই পাহাড়ের উন্নতির লক্ষ্যে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) গঠন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোর্খাল্যান্ডের অধীনে সাতটি বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। এই দফায় পাহাড়ে গিয়ে আরও তিনটি আলাদা বোর্ড গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই সবকটি বোর্ড একত্রে জিটিএ-র ছাতার তলায় থেকে উন্নয়নের কাজ করবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেজন্যই সকরি, কামি ও দমাই উপজাতিদের জন্য তিনটি আলাদা বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। আর এই ঘটনার পরই সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী বিরুদ্ধে সংঘাতের পথে গিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
কবি ভানুভক্তের জন্মদিবসে তাঁকে নিয়ে পাহাড়ে উৎসব করছে রাজ্য সরকার। সেই উপলক্ষে সেখানে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সেখানেই একমঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন গোর্খা নেতা বিমল গুরুঙ্গ। তাঁর অভিযোগ আরও তিনটি বোর্ড করে পাহাড়ে আদতে বিভাজনের রাজনীতি করছেন মমতা।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বহুবার পাহাড়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিবারই সেখানে গিয়ে বিমল গুরুঙ্গদের রাজনৈতিকভাবে কৌশলে কোণঠাসা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এবারও সেটাই করার চেষ্টা হয়েছে বলে মত মোর্চার। সেজন্য রাষ্ট্রপতির সম্মানে হওয়া নৈশভোজেও উপস্থিত থাকেননি কোনও মোর্চা নেতা।
এরপর এদিন সরাসরি একমঞ্চে রাষ্ট্রপতির সামনেই দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে মোর্চা। জিটিএ-কে এড়িয়ে কেন নতুন বোর্ড গঠন করা হল তা নিয়েই সরব হয়েছে তাঁরা।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এটা মুখ্যমন্ত্রীর মাস্টার স্ট্রোক। একদিকে তিনি যেমন তিনটি পৃথক বোর্ড গঠন করে মোর্চাকে পাহাড়ের ক্ষমতা দখলের রাস্তা থেকে খানিক সরিয়ে আনলেন, তেমনই রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালকে সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ে অনুষ্ঠান করে এটা বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে পাহাড়বাসীর পাশে রাজ্য সরকার সবসময় রয়েছে। তারজন্য আলাদা করে মোর্চার উপরে ভরসা করার কোনও প্রয়োজন নেই।
পাহাড়ে প্রশাসনিক ও মন্ত্রিসভার বৈঠক করার বার্তা দিয়ে এর পাশাপাশি ঘাসফুলের জনপ্রিয়তাকেও অনেকটাই বাড়িয়ে নিলেন তৃণমূল নেত্রী, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।