কেন্দ্রের 'দাদাগিরির' বিরুদ্ধে মমতার তোপ, কথা বলতে দেওয়া না হলে ডাকা হল কেন?
কলকাতা, ১৭ জুলাই : আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের জন্য কেন্দ্র আগে থেকেই বিষয়সূচী স্থির করে রাজ্যগুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কথা বলার সময়ও মাঝপথে বেল বাজিয়ে বক্তব্য শেষ করিয়ে দেওয়া হল। রাজ্যের কথা ভাবা হচ্ছে না, শুধু দিল্লির স্বার্থই দেখা হচ্ছে।
এমনই একাধিক অভিযোগ বাণে কেন্দ্রকে বিঁধলেন মমতা। এদিন বৈঠক শেষে মমতা বলেন, মোদী সরকার জাতীয় উন্নয়ন পরিষদের পাঠ চুকিয়ে দিয়েছেন। এখন তো শুধু নীতি আয়োগের বিষয়ভিত্তিক বৈঠক। সেখানে কথা বলার জায়গা নেই। এখন আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকেও কথা বলতে দেওয়া না হলে শুধু শুধু ডেকে আনা কেন?
মূলত, এদিন মমতার ভাষণ চলাকালীন বেল বাজিয়ে তাঁর বক্তব্য শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হলে তাতে রীতিমতো রেগে যান তিনি। তিনি বলেন, "সবাইকে নিজের সময় নিয়ে বলতে দেওয়া হল। কিন্তু আমি বলার সময় মাঝপথেই আমায় থামিয়ে দেওয়া হল।"
বারো মিনিটের ভাষণেও যতটুকু বলার সুযোগ পেলেন মমতা তাতে মোদী সরকারের দাবি বিপক্ষে কড়া যুক্তি দিয়ে অভিযোগ খারিজ করেছেন তিনি। তবে ঋণমুকুম নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করেছেন দিদি। তাঁর কথায়, একেই ঋণে জর্জরিত রাজ্য। তার উপর সরকারি অনুদানে কাঁটছাঁট করেছে কেন্দ্র। অথচ আগে থেকে তৈরি করে রাখা আলোচনাসূচিতে তা নিয়ে কথা বলারও জায়গা রাখা হয়নি।
মমতা দাবি, ঋণগ্রস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। সেই কমিটিতে রাজ্যে আর্থিক সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের পথ বাতলাতে হবে। নয়তো ঋণের বোঝার চাপে এই আর্থিক বছরেই রাজ্যের আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন দিদি।
ঋণের পাশাপাশি চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশের কার্যকর হওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। তিনি বলেন, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ায় রাজ্যকে দেওয়া কেন্দ্রীয় করের অংশ ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪২ শতাংশ হয়েছে। এদিকে ৩৯টি প্রকল্পে কেন্দ্র অনুদান দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ৫৮টি প্রকল্পে অনুদান কমে গিয়েছে। অনেক প্রকল্প কার্যত বন্ধ হওয়ার মুখে।