একতলা বাড়ি আর জেগে নেই! ’৭৮ সালের থেকেও বড় বন্যায় জলমগ্ন এই ব্লকের ১০৪ গ্রাম
’৭৮ সালের বন্যাতেও এত ক্ষতি হয়নি। এত বৃহৎ আকার ধারণ করেনি বন্যা পরিস্থিতি। এবার তো কোনও গ্রামই প্রায় জেগে নেই। ১১২টি গ্রামের মধ্যে ১০৪টি গ্রাম ডুবে গিয়েছে।
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হল শনিবার। একদিকে দামোদর, অন্যদিকে মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে উদয়নারায়ণপুরের দশটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। একতলা বাড়ি সম্পূর্ণ জলের তলায়। এনডিআরএফ উদ্ধারে গিয়েও ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছে। বিপুল পরিমাণ জল দেখে বানভাসিরা বলছেন, '৭৮ সালের থেকেও বড় বন্যা হয়েছে এবার। ডিভিসি অনেক বেশি জল ছেড়েছে বলেই সম্পূর্ণ ভেসে গিয়েছে উদয়নারায়ণপুর ও আমতা দু'নম্বর ব্লক।
[আরও পড়ুন:ভিটে-মাটির মায়ায় হেলে পড়া বাড়ির ছাদেই আশ্রয়, সেনা-কপ্টার ফিরিয়ে দিচ্ছেন দুর্গতরা]
মাটির বাড়িগুলি তো জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছেই, পাকাবাড়িও হুড়মুড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে উদয়নারায়ণপুরে। এই ব্লকের ঘোলায় চারটি ও রামপুরে দু'টি পাকাবাড়ি পড়ে গিয়েছে। অন্যদিকে মুণ্ডেশ্বরীর জলের তোড়ে খানাকুলের পুরনো জমিদারি বাঁধ ভেঙে উদয়নারায়ণপুরের পাঁচারুল, দেবীপুর-মানশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত গ্রাম চলে গিয়েছে জলের তলায়। উদয়নারায়ণপুরের জল এবার ক্রমশ নামছে আমতা দু'নম্বর ব্লকে। এবার বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে আমতারও।
এই অবস্থায় প্রচুর মানুষ আটকে পড়েছেন উদয়নারায়ণপুরের বন্যায়। উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা এনডিআরএফের সাহায্য চেয়েছেন বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারের জন্য। এনডিআরআরএফ নৌকা নিয়ে গিয়েও দুর্গতদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ। জলের তোড়ে কাউকেই উদ্ধার করতে না পেরে ফিরে যায় এনডিআরএফ। এই অবস্থায় বানভাসিদের ত্রাণশিবিরে উদ্ধার করে আনা দুরুহ বলে মনে করছে প্রশাসন। ফলে এখানেও বায়ুসেনার সাহায্য চাওয়া হতে পারে।
উদয়নারায়ণপুরের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১২টি গ্রামের মধ্যে ১০৪টি গ্রাম ডুবে গিয়েছে। বহু বাড়ির একতলা জলমগ্ন। শুধু উদয়নারায়ণপুর ব্লকেই তিন লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। বিধায়ক সমীর পাঁজা জানান, '৭৮ সালের বন্যাতেও এত ক্ষতি হয়নি। এত বৃহৎ আকার ধারণ করেনি বন্যা পরিস্থিতি। এবার তো কোনও গ্রামই প্রায় জেগে নেই। হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ সর্বত্রই জল। বানভাসিদের কথায়, এবার এত বেশি পরিমাণ জল একসঙ্গে হানা দিয়েছে উদয়নারায়ণপুরে যে, দামোদরের বাঁধের উপরও গলা পর্যন্ত জল ছিল। সেই কারণেই এবার বন্যার ব্যাপকতা অনেক বেশি।