জল-যন্ত্রণায় হরিশ্চন্দ্রপুর, ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ দুর্গতদের মধ্যে
জল-যন্ত্রণায় হরিশ্চন্দ্রপুর। প্রশাসনের তরফে ত্রাণ বিলি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বন্যা দুর্গতদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, যথেষ্ট সংখ্যক সরকারি কর্মী অমিল। ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগে, হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় হামলা
জল-যন্ত্রণায় হরিশ্চন্দ্রপুর। প্রশাসনের তরফে ত্রাণ বিলি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বন্যা দুর্গতদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, যথেষ্ট সংখ্যক সরকারি কর্মী অমিল ।
ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগে, হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় হামলা বন্যা দুর্গতদের।
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে এখনও বেশ কিছু জায়গায় ১০ থেকে ১২ ফুট জলের মধ্যে আটকে রয়েছে বহু মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে গাছের ডালেও আশ্রয় নিয়েছেন। এরই মধ্যে সরকারের ৫টি বোট হরিশ্চন্দ্রপুরের ২টি ব্লকে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। এই সংখ্যক বোট জলবন্দি মানুষদের উদ্ধার করার পক্ষে যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সবমিলিয়ে ২টি ব্লকের অন্তত ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অন্তত ৩০টি থেকে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত। জলবন্দি হয়ে রয়েছেন অন্তত হাজার চল্লিশেক মানুষ। এরমধ্যে মাত্র কয়েক হাজার মানুষ নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সামনে পুলিশের পক্ষ থেকে ত্রিপল বিলি করা হয়। ত্রিপল নিতে অন্তত কয়েক হাজার মানুষ ভিড় করেছিলেন। কিন্তু, অল্পক্ষণের মধ্যে ত্রিপল শেষ হয়ে যাওয়ায় বন্যা দুর্গতদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। ক্ষিপ্ত মানুষ হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এতে বেশ কয়েক জন সিভিক ভলিন্টিয়ার এবং পুলিশকর্মী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে ১ জন বিক্ষোভকারী গুরুতর জখম হন।
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক অফিসেও এদিন ভাঙচুর হয় বলে অভিযোগ। এক বুক সমান জলে ত্রাণ নিতে ২ নম্বর ব্লক অফিসে ভিড় করেছিলেন দুর্গতরা। কিন্তু, ত্রাণ না মেলায় ত্রাণ বিলিকারী কর্মীদের সঙ্গে বচসা ও হাতাহাতি হয় বন্যা দুর্গতদের। কিছু বন্যা দুর্গতকে হরিশ্চন্দ্রপুরের কিরণমালা গার্লস হাইস্কুল ও হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুলে স্থান দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার চাঁচলে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেখান থেকেই ফিরে যান সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুরের বন্যা দুর্গতদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। প্রশাসন জানায় বোটের ব্যাবস্থা না করতে পারায় সেচমন্ত্রী হরিশ্চন্দ্রপুরের আসতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার হরিশ্চন্দ্রপুরের কাছে কুশিদামুখী তুলসীহাটার মস্তানি রোডের ওপরের একটি ব্রিজ জলের তোড়ে ভেঙে যায়।
এদিকে, ১৫ অগাস্ট রাত থেকে ভালুকা দিয়ে মাসালদা এবং মণিপুর দিয়ে বারামাসিয়া নদীর জল মহানন্দে ঢুকতে শুরু করেছে। এর ফলে হরিশ্চন্দ্রপুরের ১ নম্বর ব্লকের আরও কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতে মালসাবাদ গ্রামে একজনকে সাপে কাটে। কিন্তু, কয়েক ফুট জলের মধ্যে দিয়ে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ফলে, বিনা চিকিৎসায় তাকে ফেলে রাখতে হয়েছে। জলবন্দি অবস্থায় এক প্রসূতিরও মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
বাহাত্তর
ঘণ্টারও
বেশি
সময়
ধরে
বিদ্যুৎহীন
হরিশ্চন্দ্রপুরের
২টি
ব্লক।
৩৩
হাজার
ভোল্টের
তারবহণকারী
বৈদ্যুতিক
পিলার
বহু
জায়গায়
উপড়ে
পড়েছে।
হরিশ্চন্দ্রপুরের
বিদ্যুৎ
সাব-স্টেশনেও
কয়েক
ফুট
জল।
সাব-স্টেশন
থেকে
বিদ্যুৎ
সরবরাহের
জন্য
বের
হওয়া
কেবলের
আন্ডারগ্রাউন্ড
নালাতেও
জল
ঢুকে
গিয়েছে।
বন্যা বিধ্বস্ত পরিস্থিতির মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎকর্মীরা উপড়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক খুঁটি মেরামতি করতে পারছেন না। ফলে, বিদ্যুৎ সরবরাহ আপাতত বন্ধ রাখা ছাড়া কোনও উপায় নেই বলেই জানিয়েছেন রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের কর্মীরা।