শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য, কল্যাণীর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যকে লাথি
শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে। এবার একেবারে উপাচার্যকে লাথি মারার অভিযোগ। আর অভিযুক্ত শাসকদলের সংগঠনের কর্মী-সদস্যরা।
কল্যাণী, ২৫ নভেম্বর : শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে। এবার একেবারে উপাচার্যকে লাথি মারার অভিযোগ। আর অভিযুক্ত শাসকদলের সংগঠনের কর্মী-সদস্যরা। নৈরাজ্যের এই ঘটনা এবার নদিয়ার কল্যাণীর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্দোলনের নামে এই অরাজকতায় স্তব্ধ শিক্ষাজগৎ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধরণীধর পাত্রের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ঘেরাও চলাকালীন তিনি যখন ঘর থেকে বের হন, তখন কেউ তাঁর পিছনে লাথি মারে। অশালীন মন্তব্য তো ছিলই, তার সঙ্গে একজন উপাচার্যকে লাথি মারার অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে শাসক শিবির। যদিও লাথি মারার অভিযোগ অস্বীকার করেছে যৌথমঞ্চ।
বুদ্ধিজীবী মহলের অভিযোগ, উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনায় এই লাথি মারার বিষয়টি নয়া সংযোজন। আগে ঠেলাঠেলি, মারধর, এমনকী চড়ের ঘটনা ঘটলেও উপাচার্য, অধ্যক্ষ বা অধ্যাপকেদর লাথি মারার মতো গর্হিত কাজ কেউ করেনি। এবার শাসক দলের সংগঠনের সৌজন্যে সেই কাজটুকুও হয়ে গেল। ক্রমেই কলঙ্কিত হয়ে পড়ছে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা।
বিগত একমাস ধরে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভ চলছিল কল্যাণীর এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারই জেরে শিকেয় ওঠে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগের পঠনপাঠন। গবেষণাও স্তব্ধ হয়ে যায়। ছাত্র, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিক, এমনকী অধ্যাপকদের একটা বড় অংশ যৌথ মঞ্চ গড়ে উপাচার্যের অফিস কক্ষের বাইরে আন্দোলনে সামিল হন। এটি নামে যৌথমঞ্চ হলেও সবাই তৃণমূলী সংগঠনের সদস্য বলেই দাবি।
টিএমসিপি ইউনিট সভাপতি তরুণ সরকার এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে বলেছেন, এ ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। যৌথমঞ্চ আহ্বায়ক মুশিয়ার আলির অভিযোগ, উপাচার্য প্রভাব খাটিয়ে নিজের লোককে নিয়োগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বজনপোষণ চালানোর অভিযোগ আর স্বৈরাচারী মানসিকতার বিরুদ্ধেই আমাদের প্রতিবাদ।এই আন্দোলনের অভিমুখ বদলের জন্যই উপাচার্য মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
এর আগেও উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনা ঘটে একাধিক ক্যাম্পাসে। উপাচার্য পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ছাত্র আন্দোলনের এই নৈরাজ্যের ঘটনা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বড়িশার 'বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেন'-এর পর এবার কল্যাণীর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও কি এবার সেই ছবি দেখা যাবে?