তৃণমূলের 'বিদ্রোহী' তালিকায় নয়া সংযোজন দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা, ২৪ জানুয়ারি : অস্বস্তি বাড়ছে বই কমছে না। একে বিজেপির ঝোড়ো হাওয়ার তেজ, তার উপর একের পর এক দলের ভারী মুখগুলি গারদে ঢুকছে, নয় ঢোকার পথে, না হয় নিদেনপক্ষে সিবিআই তলব। গোদের উপর বিষফোঁরা দলেরই বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা। এবার সেই বিদ্রোহী তালিকায় যুক্ত হলেন, রাজ্যসভার বর্ষীয়ান সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন : দলে দুর্নীতি, মমতাকে চিঠি লিখে বিদ্রোহের হুমকি তৃণমূল বিধায়কের
পরোক্ষে নয় প্রত্যক্ষভাবেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন দেবব্রতবাবু। দলনেত্রীকে 'একনায়কতন্ত্রী রাজা' হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। চোখেমুখে স্পষ্ট ক্ষোভ নিয়ে বর্ষীয়ান এই সাংসদ জানান, "আমাদের দল তো আর সাধুসন্তের দল নয়, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে যেমন সৎ-অসৎ-এর ভিড় আছে, এখানেও আছে। কিন্তু তাদের কে বাদ দেবে? যাঁর বাদ দেওয়ার কথা সেই তো রাজা হয়ে বসে আছে, একনায়কতন্ত্রী রাজা।"
শুধু দেবব্রতবাবু কেন, বর্তমানে তো তৃণমূলের অন্দরে যেভাবে বিদ্রোহ দানা বাঁধছে বিভিন্ন মহলে তাতে বিন্দুতে বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন না হয়। সরাসরি মুখ না খুললেও এবিষয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব যে উদ্বিগ্ন নয় তা বলা মানে ডাহা মিথ্যে বলা। মমতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দল শুধু ছাড়লেনই না বিজেপিতে যোগ দিলেন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ। দলের ভিতর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চিঠিতে দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন সিউড়ির বিধায়ক।
এছাড়াও সারদা, খাগড়াগড় থেকে যাদবপুর কাণ্ডে একাধিকবার দলীয় অবস্থানের বাইরে দিয়ে নিজের মত প্রকাশ করেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সাধন পাণ্ডে, সুগত বসুর মতো হেভিওয়েট নেতারা। যদিও দলনেত্রীর বিরুদ্ধে তারা কখনওই সরাসরি তোপ দাগেননি। তবে দলের ভিতরে বিদ্রোহ যেভাবে মাথা চারা দিয়ে উঠেছে তা আটকানো না গেলে অবধারিতভাবে বিপাকে পড়তে হবে দল তথা দলনেত্রীকে, এমনটাই অন্তত মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
তবে এবিষয়েও দলের তরফে সেভাবে কড়া কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ওব্রায়েন জানিয়েছেন, দেবব্রতবাবুর কাছে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। তিনি ঠিক কী বোঝাতে কথাগুলি বলেছেন তার ব্যাখ্যা দেওয়ার পরই দলে তার অবস্থান ঠিক কী হবে সে বিষয়ে নির্ণয় নেবে দলীয় নেতৃত্ব।