স্বামীর ঘরেই প্রেমিকদের সঙ্গে সহবাস মা ও মেয়ের, জলপাইগুড়ির ঘটনায় চাঞ্চল্য
সম্পর্কের জটিলতা থেকেই বাবাকে খুন করার চক্রান্ত। জলপাইগুড়িতে বিমা এজেন্ট উত্তম মহন্ত হত্যাকাণ্ডে এমনই তথ্য সামনে আসছে। ঘটনার দুদিন আগে মেয়ের ইঙ্গিতবাহী ফেসবুক পোস্ট নিয়েও তদন্তে পুলিশ
সম্পর্কের জটিলতা থেকেই বাবাকে খুন করার চক্রান্ত! জলপাইগুড়িতে বিমা এজেন্ট উত্তম মহন্ত হত্যাকাণ্ডে রহস্যের ঘনঘটা! সময়ের সঙ্গে সামনে আসছে মৃতের মেয়ের চাঞ্চল্যকর ভূমিকা। যাঁকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই মা লিপিকা-র সামনে বসিয়ে শ্বেতাকে জেরা করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় শ্বেতা দাবি করেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে প্রায়ই লিপিকার ওপর অত্যাচার চালাতেন উত্তম। যার জেরে বাবা-মায়ের সম্পর্কে অবনতি হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনার দিন সন্ধেয় স্বামীকে আম দিয়ে মুড়ি মেখে দেন লিপিকা। তাতেই মিশিয়ে দেন বিষ! যা খেয়ে মৃত্যু হয় উত্তমের। সব জেনেশুনেও পাশের ঘরে চুপ ছিলেন শ্বেতা। ফরেনসিক পরীক্ষাতেও পাকস্থলিতে বিষ পাওয়া গেছে। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের সামনে মা-মেয়ে দাবি করেছেন, বিষক্রিয়ায় নয়, স্বাভাবিক কারণেই মৃত্যু হয়েছে উত্তম মহন্তর।
তদন্তকারীরা অনেকটাই নিশ্চিত যে, বাবার মৃত্যু ও মায়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে অনেক তথ্যই গোপন করেছেন শ্বেতা। এমনকী জেঠুদেরও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।
জলপাইগুড়ি শহরেই ৩ কামরার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন উত্তম মহন্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, ফ্ল্যাটের ৩টি ঘরের একটিতে থাকতেন লিপিকা ও তাঁর প্রেমিক অনির্বাণ। একটিতে মেয়ে শ্বেতা ও অন্য ঘরে উত্তম।
কিন্তু, কেন মায়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে আগাগোড়া চুপ ছিলেন শ্বেতা? তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, স্বামীর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে প্রেমিক অনির্বাণকে দেওয়ার পাশাপাশি, শখ পূরণ করতে মেয়েকেও টাকা দিতেন লিপিকা।
সম্প্রতি উত্তম মহান্ত সিদ্ধান্ত নেন, সব সম্পত্তির নমিনি করে দেবেন মেয়েকে।
২০১৫-য়
স্বামী-কে
ছেড়ে
অনির্বাণের
সঙ্গে
দিল্লি
চলে
যাওয়ার
পরিকল্পনা
করেন
লিপিকা।
আর
এই
কাজে
মায়ের
সঙ্গী
হন
মেয়ে
শ্বেতা
ও
তাঁর
প্রেমিকও।
পুলিশ
সূত্রে
খবর,
দিল্লিতে
কয়েকদিন
কাটিয়ে
জলপাইগুড়ি
ফেরেন
লিপিকারা।
তবে
বাড়িতে
না
গিয়ে
সবাই
মিলে
চলে
যান
অনির্বাণের
গ্রামের
বাড়িতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, একদিন বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে অনির্বাণের বাড়িতে হাজির হন উত্তম। তাঁদের মধ্যে ব্যাপক গোলমাল হয়। আসে পুলিশ। জানা গিয়েছে, শ্বেতা ও তাঁর প্রেমিকও সেদিন অনির্বাণের গ্রামের বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন।
স্বামীর সঙ্গে অশান্তির মধ্যেই ২০১৬-র অগাস্টে অনির্বাণের সঙ্গে শিলিগুড়িতে চলে যান লিপিকা। কয়েকমাস সেখানে কাটিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে ফেরেন জলপাইগুড়িতে।
পুলিশ
সূত্রে
খবর,
ততদিনে
অবশ্য
লিপিকার
সঙ্গে
সম্পর্কে
দাঁড়ি
টেনে
ফের
বিয়ে
করার
সিদ্ধান্ত
নিয়ে
ফেলেছেন
উত্তম
মহান্ত।
পরিচিতরাও
সেকথা
জানতেন
বলে
দাবি
পুলিশের।
উত্তম
চেয়েছিলেন
নতুন
করে
জীবন
শুরু
করতে।
লিপিকাও
তাই
চেয়েছিলেন।
তাহলে
কেন
খুন?
নেপথ্যে
কি
অর্থের
লোভ?
উত্তর
খুঁজছে
পুলিশ।
পুলিশ জানতে পেরেছে, বাবার মৃত্যুর ঠিক ২ দিন আগে শ্বেতা, ফেসবুকে লেখা পোস্ট করেছিলেন তিনি। "অস্বস্তিকর মানুষদের মন ও চিন্তার বাইরে বের করে দেওয়া"র ইঙ্গিত দেয় সে। কে সেই অসস্বস্তিকর মানুষ? শ্বেতা কি নিজের বাবাকেই ইঙ্গিত করছে? সে কি বাবার খুনের কথা জানত? এই পোস্টের মধ্যে কাদের কথা বলেছেন শ্বেতা? খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। মায়ের বিবাহ বহির্ভুত প্রেম নিয়েও তার কোনও আপত্তি নেই। জানিয়ে দিয়েছে শ্বেতা মোহন্ত। স্থানীয় তৃণমূল নেতা পরেশ রায়ের দাবি, মায়ের মতো শ্বেতাও নিজের প্রেমিককে নিয়ে ওই বাড়িতে সহবাস করত। শ্বেতার বিরুদ্ধে, ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।