দিল্লিতে বন্ধু-বাংলায় শত্রু, কংগ্রেস-তৃণমূলের দুমুখী সম্পর্কে চরম বিভ্রান্তি দলের অন্দরে
তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলায় শত্রু এবং দিল্লিতে বন্ধুর সম্পর্ক মেনে চলাই আপাতত কংগ্রেস হাইকমান্ডের মাস্টার প্ল্যান। হাইকমান্ডের এই পরিকল্পনায় চরম বিভ্রান্তিতে কংগ্রেসের কর্মীদের একাংশই।
কলকাতা, ৫ এপ্রিল : তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলায় শত্রু এবং দিল্লিতে বন্ধুর সম্পর্ক মেনে চলাই আপাতত কংগ্রেস হাইকমান্ডের মাস্টার প্ল্যান। হাইকমান্ডের এই পরিকল্পনায় চরম বিভ্রান্তিতে কংগ্রেসের কর্মীদের একাংশই।
রাজ্যস্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের সঙ্গে বঙ্গ কংগ্রেসের মধ্যে কোনওরকম মধুর সম্পর্ক স্থাপন হওয়ার পরিবেশ নেই, তা মেনে নিয়েছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বও। কিন্তু জাতীয় স্তরে বিজেপির সঙ্গে লড়তে হলে তৃণমূলের সঙ্গ প্রয়োজন তা বুঝতে পেরেই দিল্লিতে তৃণমূলের সঙ্গে বন্ধুত্বে খোলা মনে প্রস্তুত কংগ্রেস।
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের এহেন সিদ্ধান্তে কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে চরম বিভ্রান্তির উদ্রেগ হয়েছে। রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। এখন কেন্দ্রে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের বন্ধুত্বের প্রভাব যদি রাজ্যে পড়ে তাহলে কংগ্রেসের ধার কমবে। বিরোধি আসনে থেকেও ভোঁতা দাঁতেই সব হজম করতে হবে প্রদেশ কংগ্রেসকে।
কংগ্রেস হাই কমান্ডের এই সিদ্ধান্তের ফল রাজ্যে আদৌ পড়বে কিনা হা সেক্ষেত্রে প্রদেশ কংগ্রেসের করণীয় কি তা নিয়ে স্পষ্ট হতে বিধানসভার মুখ্য বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান দিল্লিতে কংগ্রে সহ সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। তবে মান্নান জানিয়েছেন, বাংলায় কংগ্রেসের তৃণমূলের বিরোধিতার নীতিতে আপত্তি নেই হাইকমান্ডের। তাই বাংলায় যেমন চলছে তেমনই চলবে।
যদিও মান্নানের কথাতেও আশ্বস্ত হতে পারছে না প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশ। নভেম্বরে নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের ঘোষণার পর যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল গান্ধী যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন তাতে এই বিভ্রান্তি আরও বেড়েছে।
কংগ্রেসের এক প্রবীন নেতার কথায়, "তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা ইতিমধ্যে বাংলায় কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের ইঙ্গিত দিয়ে চুপিসারে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। ওদের আসল উদ্দেশ্য হল, এইসব করে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের বিদ্রোহকে ভোঁতা করে দেওয়া।"
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, কংগ্রেসের বিশ্বাসযোগ্যতা এমনিতেই কমেছে। তারউপর রাজ্য ও দিল্লিতে কংগ্রেসের এই দ্বৈত রাজনৈতিক অবস্থান দলের বাকি বিশ্বাসের জায়গাটাও খর্ব করবে।