বসিরহাটে ঢুকতে না পেরে কং-সিপিএম তোপে মমতা, কী বললেন অধীর-সুজনরা
মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেছিলেন, কোনও রাজনৈতিক দল যেন বসিরহাটের সন্ত্রস্ত এলাকায় এখনই না যান। কিন্তু বিরোধীরা সেই কথায় কর্ণপাত না করে বসিরহাট অভিযানে নামে।
বসিরহাটের সন্ত্রস্ত এলাকায় ঢুকতে বাধা পেয়ে প্রশাসনকেই দুষল কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় বচসায় জড়িয়ে পড়লেন অধীর চৌধুরী-প্রদীপ ভট্টাচার্য ও মহম্মদ সেলিম-সুজন চক্রবর্তীরা। শান্তির বার্তা দিতে প্রশাসনই বাধা দিচ্ছে বলে পরোক্ষে অভিযোগ করেন বাম-কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা।
শুক্রবার বারাসতেই আটকে দেওয়া হয় কংগ্রেস প্রতিনিধি দলকে। এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'আমরা প্রশাসনকে মদত করতেই চেয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন আমাদের শত্রু ভাবছে। সেই কারণেই পুলিশ দিয়ে আমাদের বসিরহাট যাত্রা আটকানো হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করার আহ্বান জানাতে। কিন্তু সেই চেষ্টাতেই জল ঢেলে দিতে চেয়েছে প্রশাসন।'
তাঁর কথায়, 'প্রশাসন স্বচ্ছ না হলে এলাকার বাতাবরণ সুস্থ-স্বাভাবিক হতে পারে না।' এদিন রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতেও পিছপা হননি অধীরবাবু। তিনি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা থাকলে তিনি আলোচনার টেবিলে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সমাধা্ন করতে পারতেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা করার কোনও চেষ্টা দেখা যায়নি মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। তাঁর প্রশাসনও নিশ্চুপ থেকেছে।'
এদিকে অশোকনগর ও দেগঙ্গায় বামফ্রন্টের প্রতিনিধিদের আটকায় পুলিশ। ম্যাজিস্ট্রেটের অর্ডার না থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের আটকানো হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলে দেন মহম্মদ সেলিম-সুজন চক্রবর্তীরা। পুলিশ বাধায় তাঁদের ফিরতে হয় বসিরহাটের অনেক আগে থেকেই।
মহম্মদ সেলিম বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী আজ আবেদন করছেন কোনও রাজনৈতিক দল যেন বসিরহাটের সন্ত্রস্ত এলাকায় এখনই না যান। কিন্ত তিনদিন আগেই এই আবেদন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। আসলে তিনি দাঙ্গাবাজদের সুযোগ দিয়েছেন দাঙ্গা করতে। আর অন্যদিকে নিজে ঝগড়া করতে শুরু করেছেন রাজ্যপালের সঙ্গে।'
সেলিম বলেন, 'আমরা ভেবেছিলাম মুখ্যমন্ত্রী কড়া ব্যবস্থা নেবেন। তিনি সাধারণ মানুষকে আস্থা জোগাবেন, দাঙ্গাবাজদের হুঁশিয়ারি দেবেন। সে জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেবেন কড়া ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু তা না করে তিনি ঝগড়াতেই মনোনিবেশ করলেন তিনদিন ধরে। এখন তাঁদের পথ আটকে শান্তি প্রক্রিয়ায় সামিল হতে দেওয়া হচ্ছে না।'
সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'রাজ্যে কোনও আইন নেই। পুলিশ প্রশাসনও ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে গিয়েছে। আমরা প্রশ্ন করেছিলাম আমাদের যে আটকানো হচ্ছে, ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনামা দেখানো হোক। কিন্তু তা্ দেখাতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন।' বড়বাবু আসছেন, কথা বলবেন বলে তাঁদের অপেক্ষা করিয়ে রাখা কি গণতন্ত্র? প্রশ্ন তোলেন সুজনবাবু।