উত্তরবঙ্গ উৎসবের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী, ঘুরিয়ে খোঁচা বিমল গুরুংদের
কার্শিয়াং থেকে উত্তরবঙ্গ উৎসবের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসবের পাশাপাশি ফের একবার বিমল গুরুংদের বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে সমালোচনায় সরব হতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।
দার্জিলিং, ২২ জানুয়ারি : কার্শিয়াং থেকে উত্তরবঙ্গ উৎসবের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গে সবকটি জেলা মিলিয়ে মোট ৯টি মঞ্চে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত উৎসব চলবে। এর পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ও রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন ক্রীড়া, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি আগামিকাল সোমবার ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবসে দার্জিলিংয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ অনুষ্ঠান করবেন। নিজে উপস্থিত থেকে এখানকার স্থানীয় বিশিষ্টদের সম্মানিত করবেন।
এদিন উৎসবের সূচনা করার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বঙ্গরত্ন পুরস্কার দিয়েছি আমরা ৭ জেলাকে। এটা আমরা শুরু করেছি। যারা পুরস্কার পেয়েছেন তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। এর আগে আমরা শিলিগুড়ি সাফারি পার্ক শুরু করেছিলাম। তার পথ চলা শুরু হয়েছে। সারা বিশ্ব থেকে বহু মানুষ আসবেন এখানে।
তাঁর বক্তব্য, পাহাড়ের ৯০ ছাত্রকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিলিগুড়িতে ১০০ বেডের হাসপাতালের উদ্বোধনের কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া ২৬৮ কোটি টাকা উন্নয়ন বোর্ডকে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
শিলিগুড়ি, কার্শিয়াংয়ে নানা প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। নানা প্রকল্পে সরকার অনেক টাকা মঞ্জুর করেছে। অনেকদিন ধরে নানা প্রকল্প আটকে ছিল। তার কাজ হয়নি। এই দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগে এখানে ১২টি বোর্ড ছিল। পাহাড়ে এদিন আরও তিনটি বোর্ড গঠন করল রাজ্য সরকার। যারা সংখ্যালঘু তাদের এগিয়ে আনতেই এই বোর্ড গঠন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এসবের পাশাপাশি ফের একবার বিমল গুরুংদের বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে সমালোচনায় সরব হতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। পাহাড়ে অশান্তি বিক্ষোভ নিয়ে মোর্চাকে ঘুরিয়ে সমালোচনায় বিঁধলেন মমতা। পাশাপাশি এও মনে করিয়ে দিলেন, পাহাড়ের ক্ষমতা জিটিএ-কে দেওয়া হয়েছে। কোনও সমস্যা হলে দায় তাদের, রাজ্য সরকারের নয়।
মমতা বলেন, রাজ্য উন্নয়ন করতে চায়। তবে পাহাড়ে পুরসভা, জিটিএ আমাদের হাতে নেই। তা সত্ত্বেও সরকার চেষ্টা করছে। কারণ পাহাড়ের ভাই-বোনকে আমি ভালোবাসি। লড়াই করে কোনও লাভ নেই। সকলে উন্নতি করে। আমি চাই আপনারাও উন্নতি করুন। ছোট জায়গা থেকে উঠে বড় জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হোন। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, উন্নয়নের চেষ্টা করে যাব। আপনাদের সঙ্গে সারাজীবন সম্পর্ক থাকবে।
এদিন বারবার করে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের আমজনতাকে নিজের দিকে টেনে এনে গোর্খাকে বার্তা দিলেন। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে হলে একমাত্র রাজ্য সরকারই যে তা পারে তাও এদিন ঘুরিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। তাই বারবার করে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার আবেদন করেন পাহাড়বাসীর কাছে। বলেন, সকলে সরকারের সঙ্গে থেকে উন্নয়ন যজ্ঞে শামিল হোন। সকলে শান্তিতে থাকুন। তরাই-ডুয়ার্স হাসুক এটাই সরকার চাই। পাহাড়ের মানুষ উন্নয়ন চায়। এগিয়ে যান, জীবনকে সফল করে তুলুন।