বহরমপুরে তৃণমূল ছাত্রনেতা খুনে গ্রেফতার কংগ্রেসের ৪ নেতা, এরপর কি গ্রেফতার হচ্ছেন অধীর ?
তৃণমূল ছাত্রনেতা খুনে শুক্রবার দিনভরই উত্তপ্ত থাকল বহরমপুর। বিশেষ করে এই ঘটনায় অধীর ঘনিষ্ঠ চার কংগ্রেস নেতার গ্রেফতারি রাজনীতির উত্তেজনার পারদকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তৃণমূল
কংগ্রেসের
দাপটে
অধীরের
সাম্রাজ্যে
ফাঁটল
ধরেছে
অনেকদিনই।
বহরমপুরের
সম্রাটএখন
কার্যত
মুকুটহীন।
জেলা
পরিষদ
থেকে
থেকে
বহরমপুর
পুরসভা
সবতেই
ক্ষমতাচূত্য
হয়েছে
কংগ্রেস।
বরং
এখন
সেখানে
উড়ছে
তৃণমূল
কংগ্রেসের
জয়ের
কেতন।
অধীর
চৌধুরী
এবং
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের
মধ্যে
রেষারেষি
কারোরই
অজানা
নয়।
একটা সময় বঙ্গ রাজনীতিতে এই রেষারেষিতে মমতা ও অধীর একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে রণংদেহী মূর্তিও ধারন করতেন। কিন্তু, রাজরাজ্যনীতির বর্তমান প্রবাহে মমতার থেকে এখন কয়েক যোজন পিছিয়ে গিয়েছেন অধীর চৌধুরী। ১৪ তারিখে ডোমকল পুরসভার নির্বাচনের আগে ফের তেড়েফুড়ে ওঠার চেষ্টা করছেন বহরমপুরের সাংসদ এবং প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি।
অধীরের এই প্রচেষ্টায় সামান্য হলেও ধাক্কা খেল শুক্রবার। কারণ, অধীর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের ৪ নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করেছে বহরমপুর পুলিশ। এঁদের সকলের বিরুদ্ধেই তৃণমূলের ছাত্রনেতা আসাদুল শেখকে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। কানাঘুষোয় এখন বহরমপুরে এও নাকি শোনা যাচ্ছে এই গ্রেফতারির তালিকায় এবার নাম জড়াতে চলেছে অধীর চৌধুরীর। সেরকম হলে রবিবার ডোমকল পুরসভার নির্বাচনের আগেই গ্রেফতার হয়ে যেতে পারেন বহরমপুরের সাংসদ।
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া দশটা নাগাদ দোকান বন্ধ করে বহরমপুরের ভাকুরির বাড়িতে ফিরছিলেন বছর আঠাশের আসাদুল। সক্রিয় তৃণমূল কর্মী এবং তৃণমূল ছাত্রনেতা বলেই তাঁর পরিচিতি ছিল। বাড়ি ফেরার পথেই একদল দুষ্কৃতী আসাদুলের উপর হামলা চালায়। খুব কাছ থেকে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে আসাদুলকে লক্ষ্য করে বোমাও মারে তারা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে আসাদুলকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এরপরই আসাদুল খুনে পুলিশ অধীর ঘনিষ্ঠ এবং জেলা পরিষদের প্রাক্তন কংগ্রেস সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার ও কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর হিরু হালদারকে আটক করে। এই খুনের ঘটনায় শুক্রবার বেলার দিকে কংগ্রেসের মোত ৭ নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। আটক শিলাদিত্যা ও হিরুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বহরমপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় সন্তোষ হাজরা নামে আরও এক কংগ্রেস কর্মীকে। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় সঞ্জু সিনহা নামে অপর এক কংগ্রেস কর্মীকে। ছেলেকে নিয়ে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিলেন সঞ্জু। বাকি ৩ কংগ্রেস কর্মীর খোঁজে তল্লাশি চলছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, আসাদুল শেখের খুনের ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। তাঁদের নেতা-কর্মীদের এর সঙ্গে কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করা হচ্ছে।
লকআপের মধ্যে ধৃত কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের উপরে নাকি চাপ সৃষ্টি করছে পুলিশ, যাতে তাঁরা বয়ানে বলেন অধীর চৌধুরীর নির্দেশেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য কংগ্রেসকেই খুনের জন্য দায়ী করেছে। এদিকে, দেরিতে কংগ্রেস কর্মীদের আটক এবং গ্রেফতারির করার অভিযোগে বহরমপুর থানার ওসি-কে ক্লোজ করেছে প্রশাসন।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কংগ্রেসের কেউ জড়িত নন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, এই খুন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে। কংগ্রেস নেতাদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। শুক্রবারই বহমপুরে পৌঁছে প্রতিবাদ সভা করেছেন মুর্শিদাবাদের তৃণমূল পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, 'ভোটের আগে হিংসা ছড়িয়ে মুর্শিদাবাদ দখল করবে কংগ্রেস। কিন্তু তা সম্ভব নয়। এভাবে আমাদের কর্মী-নেতাদের খুন করে তৃণমূলকে দমানো যাবে না। অধীরবাবু যে বলছেন, এই ঘটনায় কংগ্রেস জড়িত নয়, তিনি তা প্রমাণ করুন।'