অপবাদে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী ছাত্রী, কী কারণে মর্মান্তিক এই ঘটনা
গ্রামেরই এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল সঙ্গীতা। খানিকক্ষণ বন্ধুর বাড়িতে গল্প করে সে চলে এসেছিল নিজের বাড়িতে। তারপরই ওই বন্ধুর বাড়ি থেকে ৫০০ টাকা চুরির বদনাম দেওয়া হয়।
মাত্র ৫০০ টাকা 'চুরি'র অপবাদে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করল ষষ্ঠশ্রেণির এক ছাত্রী। হাওড়ার পাঁচলার বিশ্বনাথপুরে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাতে সঙ্গীতা পারাল নামে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয় কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। গ্রামেরই এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল সঙ্গীতা। খানিকক্ষণ বন্ধুর বাড়িতে গল্প করে সে চলে এসেছিল নিজের বাড়িতে। সে চলে আসার পরই ওই বন্ধুর বাড়িতে ৫০০ টাকা খোয়া গিয়েছে বলে জানতে পারা যায়। সন্দেহের তির সঙ্গীতার দিকে। প্রথমে রাস্তায় আটকে সঙ্গীতার পোশাক খুলিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। তারপর ব্যাগ থেকে পাওয়া যায় ৫০০ টাকা।
এরপর স্কুলে গেলেও চুপচাপ ছিল সঙ্গীতা। কারও সঙ্গে কোনও কথা বলেনি সে। বাড়ি ফিরে বাড়ির দরজা জানলা বন্ধ করে ওই ছাত্রী। বাড়ির লোক প্রথমে কিছু বুঝতে পারননি। এরপর ঘর থেকে পোড়া গন্ধ বের হতে থাকে। সঙ্গীতার পরিবারের সদস্যরা তখন ছুটে গিয়ে দেখেন, গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে সঙ্গীতা। দাউ দাউ আগুনে জ্বলতে থাকে তার পুরো শরীর।
এরপর কোনওরকমে আগুন নিভিয়ে স্থানীয় গাববেরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। শারীরিক অবস্থায় অবনতি হলে সঙ্গীতাকে রাতেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়। তার ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। ফলে শেষরক্ষা হয়নি। একদিন পর বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
অভিযোগ, কে টাকা চুরি করেছে তা প্রমাণ হয়নি। টাকা সঙ্গীতার ব্যাগ থেকে পাওয়া গিয়েছিল ঠিকই, তা কে ঢুকিয়েছিল, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে। তারপর পোশাক খুলিয়ে তল্লাশি, 'চোর' সম্বোধনে সে অপামানিত বোধ করে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েই আত্মহননের পথ বেছে নেয় বলে প্রাথমিক ধারণা। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন সঙ্গীতার পরিবারের সদস্যরা।