হনুমান জয়ন্তীতে মিছিলের ছবি তোলার ‘অপরাধে’ সিভিক ভলেন্টিয়ারদের পেটাল সংঘ
হনুমান জয়ন্তীতে সংঘের মিছিলের ছবি তোলার ‘অপরাধ’-এ দুই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে ব্যাপক মারধর করল বিজেপি।
বীরভূম, ১১ এপ্রিল : হনুমান জয়ন্তীতে সংঘের মিছিলের ছবি তোলার 'অপরাধ'-এ দুই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে ব্যাপক মারধর করল বিজেপি। অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে টেনে নিয়ে গিয়ে তাঁদের মারধর করা হয়। তাঁদেরকে অফিসের ভিতর দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ। এদিন মিছিলের নামে চূড়ান্ত গুন্ডামির নিদর্শন রাখল বিজেপি তথা আরএসএস। রেয়াত করল না পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদেরও।
রামনবমীর পর হনুমান জয়ন্তীকেও ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করার জন্য বেছে নিয়েছিল সংঘ। অনুমতি না নিয়েই মিছিল করায়, বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দিয়ে, পুলিশকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে মিছিল এগিয়ে যায়। তখনই পাল্টা প্রতিরোধ করে পুলিশ। লাঠিচার্জ করে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় সংঘ কর্মীদের। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
পুলিশের সঙ্গে দ্বন্দ্বের মধ্যেই বিজেপি ও সংঘ কর্মীদের চোখে পড়ে দুই যুবক তাঁদের মিছিলের ছবি তুলছে। দুই চিত্রগ্রাহকের উপর চড়াও হন বিজেপি কর্মীরা। সাধারণ পোশাকে থাকা ওই দুই চিত্রগ্রাহক আসলে সিভিক ভলেন্টিয়ার। পরিচয় দিলেও বিজেপি ও আরএসএস কর্মীরা তাদেরকে মারধর করতে থাকে। এমনকী দু'জনকেই টেনে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় অফিসে। অফিসের ভিতরে আটকে রেখে তাদের মারধর করা হয়।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি এই ঘটানাকে সাজানো বলে দাবি করেন। বলেন, পুলিশই তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিচার্জ করে অশান্ত কের তুলেছে। পুলিশের লাঠিচার্জের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ চলবে। বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। পুলিশের কাজ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, তা না করে তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে রাজ্য পুলিশ।
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, বিজেপি এর শেষ দেখে ছাড়বে। তারা কংগ্রেস বা সিপিএম নয় যে, পড়ে পড়ে মার খাবে। প্রয়োজনে পাল্টা প্রতিরোধের পথেও নামতে দ্বিধা করবে না তারা। এদিকে মিছিলের জন্য বিজেপি তথা আরএসএস বেছে নিয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের বীরভূমকেই। উল্লেখ্য তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল রামনবমীর দিন হনুমান পুজোর নিদান দিয়েছিলেন কর্মীদের উদ্দেশ্যে। বিজেপি এবার সেই হনুমানকে নিয়ে নেমে পড়ল রাজনীতিতে। সংঘের পতাকা নিয়ে মিছিল করে শক্তি যাচাইয়ে নামল বীরভূমের সিউড়িতে।
অভিযোগ, বাংলায় যে করেই হোক ধর্মীয় আবেগ উসকে দেওয়ার কাজ চালিয়ে যেতে চাইছে সংঘ। সংঘ বুঝেছে এই পথেই বাংলায় তাদের ভিত মজবুত করা যেতে পারে। সোমবারই সংঘের তরফে বিশেষ বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, রামনবমীতে অস্ত্র নিয়ে মিছিলে ১০০ জনের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, তার প্রতিবাদে মিছিল করা হবে রাজ্যব্যাপী। কোনওভাবেই এই ইস্যু থিতিয়ে দেওয়া চলবে না। তার মধ্যেই মঙ্গলবার হনুমান জয়ন্তীতে মিছিল বের করে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে সামিল হল সংঘ তথা বিজেপি নেতৃত্ব। বারভঊম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্র মণ্ডল বলেন, বিজেপি তথা সংঘ মিছিলের কোনও অনুমতি নেয়নি। পুলিশ ঠিক কাজই করেছে।