বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ-তামিলনাডু: দুনিয়ার জঙ্গিরা ঘর গোছাচ্ছে, প্রশাসন কিছুই জানে না?
কিন্তু এই সমস্ত চাপানউতোরের মধ্যে যে সহজ ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না তা হল স্থানীয় পর্যায়ে যথেষ্ট সাহায্য এবং সমর্থন না থাকলে এই অস্ত্রশস্ত্রের এই বিশাল কর্মকাণ্ড বর্ধমানের এক জনবহুল জায়গায় হতে পারে না, তা সে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান যাই বলুন না কেন |
জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদেই ৪৩টি বোমা কারখানা চালু করেছে!
ঘটনার ভয়াবহতা বিচার করার জন্যে একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান তুলে ধরা যাক | ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি অথবা এনআইএ-র আধিকারিকরা তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পেরেছেন যে জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামক উগ্রপন্থী সংগঠন যে ৫৮টি বোমা কারখানা চালু করেছে সম্প্রতি তার মধ্যে ৪৩টি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলাতেই অবস্থিত |
বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে তামিলনাডু: দুনিয়ার জঙ্গি ঘর গোছাচ্ছে একসঙ্গে
এছাড়া, জেএমবি-র সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠন জামাত-এ-ইসলামির যুব সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরেরও | এই ছাত্র শিবির সম্পর্কে এখানে জানিয়ে রাখা চলে যে, ভারতে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশে এর পিছনে এর ব্যাপক অনুদান রয়েছে | মহিলা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্যে এদেশে বেআইনিভাবে ঢোকানোর পিছনেও এই শিবির বড় ভূমিকা পালন করেছে | ১৯৯৮ সালে তামিলনাড়ুর কয়েম্বত্তুরে জঙ্গিহানার পিছনে আল-উম্মাহ নামে যে জঙ্গি সংগঠন ছিল, তার সঙ্গেও এই ইসলামি ছাত্র শিবিরের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের কথাও জানা গিয়েছে | আল-উম্মাহ তামিলনাডুতে সেই জঙ্গিহানার পর থেকেই নিষিদ্ধ|
মুর্শিদাবাদই বাংলাদেশি জঙ্গিদের কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থল?
তদন্তকারীরা
এও
জানতে
পেরেছেন
যে
এই
বাংলাদেশী
উগ্রপন্থীরা
পশ্চিমবঙ্গের
নির্দিষ্ট
কিছু
অঞ্চলকে
তাদের
কর্মকাণ্ডের
জন্যে
বেছে
নিলেও
তাদের
কেন্দ্রস্থল
ছিল
মুর্শিদাবাদই
|
এই
অঞ্চলে
উগ্রপন্থীদের
আনাগোনা
পুরোদমে
শুরু
হয়
২০১০
সাল
থেকে
|
এনআইএ-র
খবর
অনুযায়ী,
২০১১
সাল
থেকে
এ-যাবৎ
১৮০জন
জঙ্গি
বাংলাদেশ
থেকে
মুর্শিদাবাদ
মডিউল-এর
পরিকল্পনা
অনুযায়ী
পশ্চিমবঙ্গে
এসেছে
|
কে
এই
আনিসুর?
কেনই
বা
স্থানীয়
নেতৃত্ব
তাকে
জঙ্গিদের
আড়াল
করতে
মদত
করত?
গোয়েন্দা সুত্রে এও জানা গিয়েছে যে আনিসুর নামে এক ব্যক্তি এই সমস্ত বাংলাদেশী সদস্যদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করত এবং স্থানীয় নেতৃত্বের সমস্তরকম সহযোগিতায় সে পেত | বাংলাদেশ থেকে আগত অতিথিদের পরিচয় যাতে গোপন থাকে সে ব্যাপারেও স্থানীয় নেতৃত্ব অনিসুরকে সবরকম সাহায্য করত বলেই জানা গিয়েছে |
ছোটখাটো ব্যবসা করে আসল কর্মকাণ্ড গোপন রাখা
এনআই-র তরফে এও জানানো হয়েছে যে জেএমবি সদস্যরা নিজেদের বেআইনি কার্যকলাপ গোপন রাখার জন্যে ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করত যাতে কেউ তাদের সন্দেহ না করে | খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণকাণ্ডে নিহত শাকিল আহমেদ-এরও সেরকম একটি জামাকাপড়ের দোকান ছিল | আর এই ব্যবসার আড়ালে চলত তার মারণকাণ্ড বিস্ফোরণের পর তার আসল পরিচয় তদন্তকারীদের সামনে উঠে এসেছে |
স্থানীয় নেতৃত্বের মদত ছাড়া এমন বিশাল কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব
স্থানীয় আধিকারিকরাও দরাজ হস্তে এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের মদত করে গিয়েছে
এনআইএ
এখন
এই
'স্থানীয়
নেতৃত্ব'
বিষয়টির
উপরেই
জোর
দিতে
চাইছে
|
এব্যাপারে
তারা
স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রককেও
জানিয়েছে
|
এছাড়া,
মুর্শিদাবাদ
গ্রাম
পঞ্চায়েতের
যে
সকল
আধিকারিকরা
বাংলাদেশী
অনুপ্রবেশকারীদের
দরাজ
হস্তে
এদেশের
বৈধ
কাগজপত্র
প্রদান
করেছে
গত
এক
বছর
ধরে,
তাদের
উপরেও
নজরদারি
চালাবে
বলে
জানা
গিয়েছে
|
এই
আধিকারিকদের
দৌলতে
এই
বাংলাদেশীরা,
যারা
সবাই
জেএমবি-র
সদস্য
বলে
সন্দেহ
করা
হচ্ছে,
সারা
ভারতে
ঘুরে
বেড়ানোর
ছাড়পত্র
আদায়
করে
ফেলেছে
বলে
গোয়েন্দা
সূত্রের
খবর
|
মাদ্রাসা:
জঙ্গিদের
আশ্রয়
এবং
তাদের
অস্ত্র
লুকিয়ে
রাখার
স্থান?
এনআইএ-র রিপোর্ট সাবধান করেছে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অজস্র মাদ্রাসা সম্পর্কেও | এই সমস্ত মাদ্রাসাগুলিতে বাংলাদেশ থেকে আগত জঙ্গিরা শুধু যে আশ্রয় নিত তাই নয়, তারা তাদের অস্ত্রশস্ত্রও এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে লুকিয়ে রাখত বলে খবর | এমনকি কৃষিজমিও সস্তায়ে কেনাবেচা হত এই সমস্ত মাদ্রাসা তৈরী করার জন্যে |