(Update) রামনবমীতে ফের একবার কু-কথার বাণ দিলীপ ঘোষের
রামনবমীতে রাজনৈতিক মেরকরণের লড়াইয়ে নেমে কু-কথার বাণ ছাড়লেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, রামকে যারা ভয় পায়, রাম তার নয়। এটা রামজাদা বনাম হা***দার লড়াই।
কলকাতা, ৫ এপ্রিল : রামনবমীতে রাজনৈতিক মেরকরণের লড়াইয়ে নেমে কু-কথার বাণ ছাড়লেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'রামছাড়া পৃথিবী আমরা ভাবতে পারি না। আমরা মনে করি সারা পৃথিবীতে রাম বিরাজমান। রামকে যারা ভয় পায়, রাম তার নয়। এটা রামজাদা বনাম হা**জাদার লড়াই। এই লড়াইয়ে ঠিক হয়ে যাবে কে রামের দিকে, কে নয়।' বিজেপি রাজ্য সভাপতির এহেন মন্তব্য নিয়েই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন তিনি।
তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছে, বাংলার সংস্কৃতিকে কলঙ্কিত করছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। ওনাকে বয়কট করুন। বৈঠকখানায় বসে যাঁরা আড্ডা মারেন, তাঁরা ওনার থেকে ভালো ভাষায় কথা বলেন। ওনার কথার মধ্যে কোনও সভ্যতার প্রকাশ নেই। পার্থবাবু প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি-র রাজনৈতিক কর্মসূচি কি শেষ?
সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, রামনবমীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বিজেপি। একেবারেই দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য। আমার তো মনে হয় ওই কথার বাংলা মানে উনি বোঝেন না।
রামনবমী পালন যদি ধর্মীয় মেরুকরণ হয়, তবে মেরুকরণ করব, আটকে দেখাক : দিলীপ
কলকাতা, ৫ এপ্রিল : রামনবমী পালন করলে যদি ধর্মীয় মেরুকরণ হয়, তবে আমরা মেরুকরণ করব। রামনবমী পালন করে, রামনবমীতে অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রা বের করেই আমরা হিন্দু সমাজ বাঁচাতে লড়াই করব। রামনবমীর পালন প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসকদলকে প্রত্যক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, কারও ক্ষমতা থাকলে আমাদের আটকে দেখাক।
তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এদিন বলেন, ইদ, মহরম কিংবা বড়দিন পালন করলে তো কই মেরুকরণ হয় না। তাহলে রামনবমী পালন করলে মেরুকরণের প্রশ্ন উঠছে কেন? যদি মেরুকরণ হচ্ছে বলে মন হয়, তখন আমকা একশো বার মেরুকরণ করব। তিনি রাজ্যজুড়ে রামনবমীতে অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রা করার ঘটনাকে সমর্থনও করেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'রামের হাতেও তির ধনুক রয়েছে। আমাদের তেত্রিশ কোটি দেবতার হাতেও অস্ত্র রয়েছে। অস্ত্র ও শাস্ত্র নিয়েও আমাদের সমাজ। তাই অস্ত্র নিয়ে মিছিল করা কোনও দোষের নয়। অস্ত্র শক্তির প্রতীক। আমরা শক্তি পুজো করি। শক্তির উপাসক। তাহলে শক্তি প্রদর্শন করতে দোষ কোথায়!'
তিনি এরপর শাসকদেলর উদ্দেশ্য হুঙ্কার ছাড়েন, শাসকদল সাবধান হন। বাংলায় এবার রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠা হবে। রাবনদের বিনাশ ঘটিয়ে বাংলায় সেই রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠা করার সূচনা হল এই রামনবমী থেকেই। তাঁর কথায়, রাজ্যে হিন্দু সমাজ সম্পূর্ণ অসুরক্ষিত। আক্রমণ ঘটছে মঠ-মন্দিরে। নিজেদের প্রয়োজনেই হিন্দুদের হাতিয়ার তুলে নিতে হবে। রাজ্য সরকার চোখ বন্ধ করে রয়েছে। কিন্তু তা বলে প্রলয় থেমে থাকবে না। সেদিন সমাগত প্রায়।
রামনবমী পালন হবে। অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রা হবে। এটা আমাদের অধিকার। এটাই পরম্পরা, এটাই প্রথা। সেই প্রথার অন্যথা হবে কেন। আমাদের বাধা দিলে উত্তরপ্রদেশে যা হয়েছে, বাংলাতেও তা হবে, প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন দিলীপবাবু। হিন্দু সমাজকে লুরক্ষার জায়িত্ব নিতে হবে নিজেদেরই।
মেরুকরণের রাজনীতি প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর অভিমত, কমিউনিজম, সেকুলারিজমের নামে যদি মেরুকরণ হতে পারে, তাহলে হিন্দুত্বের নামে মেরুকরণের অধিকার আমাদের আছে। আমরা তা করব। যদি ক্ষমতা থাকে আমাদের কেউ আটকে দেখাক। দিলীপবাবু এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেন, রাজ্যে গেরুয়া ঝড় দেখে ভয় পেয়েছেন দিদি। দিদি, আপনি পশ্চিমবঙ্গ সামলান। দিল্লির দিকে চোখ তুলে তাকালে পশ্চিমবঙ্গ দখল হয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।