ছাদনাতলায় যেতে মানা, জ্যোতিষীর পরামর্শেই অজ্ঞাতবাসে গিয়েছিলেন ‘শিক্ষক’ বর
অপহরণ নয়, ছাদনাতলায় দাঁড়ানোর আগে জ্যোতিষীর পরামর্শে অজ্ঞাতবাসে গিয়েছিলেন কোচবিহারের নিখোঁজ শিক্ষক সুনয়ন মোদক।
কোচবিহার, ১৮ মার্চ : অপহরণ নয়, ছাদনাতলায় দাঁড়ানোর আগে জ্যোতিষীর পরামর্শে অজ্ঞাতবাসে গিয়েছিলেন কোচবিহারের নিখোঁজ শিক্ষক সুনয়ন মোদক। রহস্য নিখোঁজের পর ২০ দিন তিনি নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তাঁর সন্ধানে যখন সিবিআই তদন্তের দাবি উঠতে শুরু করেছে, তখনই পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন তিনি। ২০ দিন অজ্ঞাতবাস কাটিয়ে ফিরলেন বাড়িতে।
জ্যোতিষীর পরামর্শে বিয়ে বন্ডুল করে পালানোর কথা প্রচার হয়ে এতে এখন আর পাত্রীপক্ষও বিয়েতে রাজি নয়। পাত্রীপক্ষের মত, জ্যোতিষীর খা শুনে যখন পালিয়েছিলেন পাত্র, তখন সারা জীবন তাঁর কথা শুনেরই চলুক। এমন ছেলের সঙ্গে আর বিয়ে দিতে রাজি নন কেউ-ই। তবে বিচ্ছেদের এই করুণ সুরের মধ্যে পাত্রী কী চান, তা এখনও অস্পষ্টই।
কোচবিহারের বাসিন্দা রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান বিয়ের আগে। অথচ কত কাট-খড় পুড়িয়ে তবেই বিয়েতে রাজি করিয়েছিলেন পাত্রীপক্ষকে। তিন বছরের প্রেম স্কুলেরই সহ শিক্ষিকার সঙ্গে। কিন্তু পাত্রীর বাড়ি রাজি ছিলেন না সুনয়নের সঙ্গে বিয়েতে। তাঁর বাড়ি-ঘর পরিবেশই প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের বিয়েতে। অনেক লড়াই করে সুনয়ন রাজি করান পাত্রীপক্ষকে।
শেষমেশ পাত্রই বেপাত্তা। তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই তদন্ত শুরু করে কোচবিহার পুলিশ। কিন্তু ২০ দিন কেটে যাওয়ার পরও কোনও কিনারা করতে পারেনি ছাদনাতলায় দাঁড়ানোর আগের মুহূর্তে রহস্যজনকভাবে বরের নিখোঁজ হওয়ায় ঘটনার। ২ মার্চ বিয়ের ঠিক ছিল, ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আর খোঁজ মিলছিল না সুনয়নের। প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি।
পুলিশ যখন হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছে, তখনই একদিন ধূপগুড়িতে এক যুবককে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে দেখা যায়। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, এই ব্যক্তিই সুনয়ন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে ফিরিয়ে আনে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে জ্যোতিষীর কথা শুনে বিয়ের ভয়ে পালিয়েছিলেন তিনি।
জ্যোতিষী তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, এই বিয়ে করলে তাঁর জীবন বিষময় হয়ে উঠবে। তখনই নিজেক অজ্ঞাতবাসে লুকিয়ে রাখার পরিকল্পনা করেন শিক্ষক। একজন শিক্ষিত যুবকের এই কান্ডকারখানায় হতাশ পাত্রীপক্ষ। তাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁদের মেয়ের জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলার কি কোনও প্রয়োজন ছিল?