আকাঙ্খাকে পরিকল্পনা করে খুন নাকি উদয়নের মানসিক বিকার, মনোবিদের সাহায্যে উত্তর খোঁজার চেষ্টা পুলিশের
তদন্তকারীদের কাছে একটি প্রশ্ন আরও জোরালো হয়ে উঠছে। কেন মাত্র ১ মাসের সম্পর্কের মধ্যে আকাঙ্খাকে খুন করল উদয়ন সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও পরিষ্কার নয় তদন্তকারীদের কাছে।
কলকাতা, ৫ ফেব্রুয়ারি : যত দিন যাচ্ছে জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে আকাঙ্খা শর্মা হত্যাকাণ্ড। উদয়নকে জেরা করে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারছে। সেই সঙ্গেই তদন্তকারীদের কাছে একটি প্রশ্ন আরও জোরালো হয়ে উঠছে। কেন মাত্র ১ মাসের সম্পর্কের মধ্যে আকাঙ্খাকে খুন করল উদয়ন সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও পরিষ্কার নয় তদন্তকারীদের কাছে।[আকাঙ্খার আগে নিজের বাবা-মাকেও খুন করেছে উদয়ন, দাবি ভোপাল পুলিশের]
এর আগেই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুধু আকাঙ্খা নয়, নিজের মা-বাবাকেও খুন করেছিল উদয়ন। নিজের মুখেই সে কথা স্বীকার করে নিয়েছে সে। এখান থেকেই প্রশ্ন দানা বাঁধছে তবে কি উদয়ন মা-বাবাকে খুন করেছে সে কথা আকাঙ্খা জেনে গিয়েছিল বলেই নিজের অপরাধ ঢাকা দিতে আকাঙ্খাকে খুন করেছে সে। [আকাঙ্খা খুনে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি প্রেমিক উদয়নের, উদ্ধার হল দেহের আকৃতির কংক্রিটের চাঙর]
পাশাপাশি উদয়ন মানসির বিকারগ্রস্ত কিনা সে বিষয়টাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদয়ন বাবা-মাকে খুন করেছে একথা কোনওভাবে আকাঙ্খা জানতে পারে এবং সে উদয়নকে ছেড়ে চলে যেতে চায়। আকাঙ্খাকে যেতে দেবে না বলেও তাকে উদয়ন খুন করতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।
তবে উদয়নের বিষয়ে জানতে ওর অতীত আরও ঘাঁটতে হবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। আকাঙ্খাকে খুন করার দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে তারপর তাঁকে উদয়ন খুন করেছে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। জেরায় উদয়ন জানিয়েছে, সে টিভির বিভিন্ন ধারাবাহিক দেখে। পুলিশের অনুমান বিভিন্ন সিরিয়াল দেখে সেখান থেকে খুনের ছক কষতে পারে উদয়ন। তবে পুরোটাই তদন্তসাপেক্ষ। তবে উদয়নকে জেরা করতে এবার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারে তদন্তকারী দল।
উল্লেখ্য, আকাঙ্ক্ষা শর্মারা আদতে বিহারের বাসিন্দা হলেও তাঁর বাবা বাঁকুড়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হওয়ায় সেখানেই থাকত গোটা পরিবার। গত বছরের জুনে বিদেশে চাকরি পেয়েছে বলে ঘর ছাড়ে আকাঙ্খা। সোজা গিয়ে ওঠে প্রেমিক উদয়নের বাড়িতে। সেখান থেকে স্যোশাল মিডিয়া ও ফোনে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত সে। তবে ডিসেম্বরের শেষ থেকে আকাঙ্খার মোবাইলে যোগাযোগ করা না যাওয়ায় পরিবারের তরফে জানুয়ারির শুরুতে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
এরপর তদন্তে নেমে আকাঙ্ক্ষার মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে পৌঁছয় বাঁকুড়া পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় উদয়নকে। এরপরই জেরায় প্রথমে আকাঙ্খাকে খুনের কথা ও পরে বাবা-মাকে খুন করার দাবিও করেছে সে।