রেজ্জাক মোল্লার নামে জবাবদিহি করতে গিয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত আরাবুলের!
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় বিশাল মার্জিনে এগিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেবার ভোট করানোর দায়িত্ব ছিল 'তাজা নেতা' আরাবুল ইসলামের ঘাড়ে। সেই দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করেন তিনি। ভোটকে কার্যত বিরোধী শূন্য করে দিয়ে, ছাপ্পা-রিগিংয়ের অভিযোগকে দূরে সরিয়ে দলকে ভাঙড়ে বিরাট মার্জিন এনে দেন তিনি।
ভাঙড়ে রেজ্জাক মোল্লার ভোট সামলাবেন আরাবুল
এহেন তাজা নেতাকে দলবিরোধী কাজের জন্য সাসপেন্ড করে দিয়েও ফের একবার ভোটের আগে ফিরিয়ে এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে ভোটে দাঁড় করায়নি। খানিকটা তেতো গেলার মতো করেই তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে এমন একজনকে যার সঙ্গে আরাবুলের 'কুস্তি'-র কথা সর্বজনবিদিত। তিনি বাম শিবির থেকে তৃণমূলে আসা আবদুর রেজ্জাক মোল্লা।
তিনবছর আগে এই ভাঙড়েই রেজ্জাক মোল্লার কোমড় ভেঙে তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন আরাবুল। আর এবার তাঁরই ভোট সারথী হয়ে প্রচারে নামতে হয়েছে তাঁকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে রেজ্জাক সাহেবের নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান করেছেন।
রেজ্জাক মোল্লাই একমাত্র প্রার্থী যিনি দুটি দল থেকে বহিঃষ্কৃত হয়ে ভোটে লড়ছেন
তবে যতই উপরে দোস্তি করানোর চেষ্টা করুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আরাবুল বা রেজ্জাক মোল্লা রয়েছেন নিজেদের জায়গায়। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারেন না। রেজ্জাক মোল্লা সরাসরি বলছেন, আরাবুল সামনে ভোটের প্রচার করছেন, আর পিছনে নিজের লোকেদের দিয়ে বলে দিচ্ছেন তাঁকে ভোট না দিতে। অর্থাৎ এককথায় দলের মধ্যে অন্তর্ঘাত করছেন।
রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য রেজ্জাক মোল্লার
অন্যদিকে, আরাবুল রয়েছেন নিজের মেজাজে। তিনি তৃণমূলের অনুগত সৈনিক। নানা অভিযোগে সাসপেন্ড হয়েছেন, জেলে গিয়েছেন। তবু মমতাকে ছেড়ে দলবদল করেননি। এহেন আরাবুলের বক্তব্য, সিপিএমের এই দীর্ঘদিনের নেতাকে তৃণমূল বলেই কেউ মনে করছেন না। সবাইকে বোঝাতে গিয়েই প্রাণপাত করতে হচ্ছে। তার উপরে সরকারে থেকে বাম রাজত্বে রেজ্জাক মোল্লারা যা করেছেন তাতে প্রচারে গেলেই দলীয় কর্মী সমর্থকদের সমালোচনায় কান পাতা দায় হয়ে উঠেছে।
দেব ও মুনমুন সেনকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য রেজ্জাক মোল্লার
সেইসমস্ত ঘটনার ব্যাখ্যা নিজের মতো করে আরাবুল ও তাঁর সঙ্গীদের দিতে হচ্ছে। তার উপরে কয়েকদিন আগে নিজের দলের, অন্য দলের নেতা-নেত্রীদের নিয়ে রেজ্জাক মোল্লার অনর্থক বিতর্ক তৈরি করা মন্তব্য যেন আরও বিগড়ে দিয়েছে গোটা পরিকল্পাটাকে। রেজ্জাক মোল্লার মতো প্রার্থী কেন ভাঙড়ে সেই জবাবদিহি করতে গিয়ে প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছেন আরাবুল।
তাঁর কথায়, মানুষকে কোনওভাবে বাগে আনতেই পারছেন না তিনি। ফলে সবশেষে ভরসা রাখছেন ভগবান ও দিদির প্রতি মানুষের ভালোবাসার উপরে। তারপর যা হবে দেখা যাবে।