সিপিএম শুদ্ধকরণের জলাঞ্জলি, ‘দাগি’ নেতাদের ঠাঁই ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটিতে!
একদা দলে শুদ্ধকরণের কথা বলে ‘দাগি’ নেতাদের দল থেকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল সিপিএম। কিন্তু তাতেও ভাবমূর্তি ফেরেনি। আবার তাই পুরনোদের ফিরিয়ে দলকে শক্তিশালী করতে চাইছে সিপিএম?
সিপিএমে শুদ্ধিকরণের জলাঞ্জলি। ফের 'দাগি' নেতাদের ফিরিয়েই ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা খুঁজছে একদা ৩৪ বছর রাজ্য শাসন করা এই দল। একদা দলে শুদ্ধিকরণের কথা বলে 'দাগি' নেতাদের দল থেকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল সিপিএম। কিন্তু তাতেও ভাবমূর্তি ফেরেনি আদতে। শেষপর্যন্ত 'শুদ্ধিকরণ'কে জলাঞ্জলি দিয়ে দলের অস্তিত্ব রক্ষায় ফের ছেঁটে ফেলা নেতাদের দলে ফেরানোর কাজ শুরু হল। অনুজ পাণ্ডে, ফুল্লরা মণ্ডলের মতো অভিযুক্ত নেতারা ঠাঁই পেলেন ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটিতে।
নেতাই গণহত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত অনুজ পাণ্ডে ও ফুল্লরা মণ্ডল। দু'জনেই এখন জেলে। তা সত্ত্বেও দুই নেতাকে স্থান দেওয়া হয়েছে জেলা কমিটিতে। নতুন জেলা ঝাড়গ্রামের সিপিএমের ৩৩ জনের কমিটিতে নাম রয়েছে দু'জনেরই। ফলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে দলে শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সিপিএমে এখন সক্রিয় নেতা নেই। তাই তাঁরা যে সমস্ত দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের একমসয় ছেঁটে ফেলে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চেয়েছিল, এখন তাঁদেরই হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।
শুধু নেতাইকাণ্ডে নাম জড়ানোই নয়, অনুজ পাণ্ডের প্রাসাদোপম বাড়ি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তখনই সিপিএমের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল দুর্নীতিগ্রস্থ নেতাদের দল থেকে তাড়ানো হবে। দলে শুদ্ধাকরণে জোর দিচ্ছে তাঁরা। তারপর নেতাইকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে, গ্রেফতার হয়েছেন অনুজ পাণ্ডেরা। এরপরও সেইসব নেতাদের ফের ফিরিয়ে আনা হল জেলা কমিটিতে। মানুষ কতটা ভালো চোখে নেবেন এই বিষয়টি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে পড়েছে।
মঙ্গলবার সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটি গঠিত হয়। নতুন জেলার নতুন কমিটি। সেই কমিটিতে জেলে থাকা দুই অভিযুক্তের স্থান পাওয়া নিয়েই বিতর্ক তুঙ্গে। এদিন জেলা কমিটি গঠনের সময় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য মদন ঘোষ, দীপক সরকার প্রমুখ। নতুন জেলা কমিটির সম্পাদক হয়েছে ডহরেশ্বর সেন।
তিনি বলেন, সিপিএম কর্মীরা আক্রান্ত। রাজ্যের শাসক দল পরিকল্পিতভাবে হামলা চালাচ্ছে তাঁদের উপর। এই সন্ত্রাস প্রতিরোধ করাই এখন তাঁদের প্রথম চ্যালেঞ্জ। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অবশ্যই বিজেপি এই মুহূর্তে তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী, কিন্তু তাঁদের লড়াই দু'নম্বরের জন্য নয়, লক্ষ্য একনম্বর হওয়াই।