পঞ্চায়েতের টাকায় পুকুর ভরাট করে নিজের বাড়ির রাস্তা তৈরির অভিযোগ প্রধানের বিরুদ্ধে
বেআইনিভাবে পুকুর ভরাট করে নিজের বাড়ি ঢোকার রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠল হাওড়ার বাঁকড়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে।
হাওড়া, ১ মে : বেআইনিভাবে পুকুর ভরাট করে নিজের বাড়ি ঢোকার রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠল হাওড়ার বাঁকড়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, পঞ্চায়েতের টাকায় কোনও অ্যাকশন প্ল্যান ছাড়াই নিজের বাড়িতে ঢোকার জন্য ২০ ফুট চওড়া রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। শুধু এক্ষেত্রেই নয়, এলাকায় আরও পুকুর বুজিয়ে প্রোমোটারি চক্র চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে স্বজনপোষণেরও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলী পঞ্চায়েত প্রধান আকতার হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে।
এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। আকতার হোসন মোল্লার দাবি, এলাকার মানুষের সুবিধার্থে এই রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। পুকুরের মালিক নিজে সাধারণের সুবিধার্থে ওই অংশটি বিক্রি করেছেন, তারপর গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে রাস্তা নির্মাণ করছেন। এই রাস্তা নির্মাণের জন্য কোনওভাবেই পঞ্চায়েতের টাকা বরাদ্দ করা হয়নি। একশ্রেণির মানুষ হিংসায় এইসব কথা রটাচ্ছেন।
বাঁকড়া এক নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রধানের বাড়ির সামনে ২৪ কাঠা পুকুরের একটি অংশ ভরাটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ওই অংশে ২০ ফুট চওড়া ও ১৮০ ফুট দীর্ঘ একটি রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। পরিবেশ ভারসাম্যকে বৃদ্ধঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে এই পুকুর ভরাটের কাজ করা হচ্ছে বলে এলাকার মানুষের তরফে অভিযোগ। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই পুকুর ভরাট ও রাস্তা নির্মাণই বড় ইস্যু হতে চলেছে এলাকায়।
এছাড়া সরকারি জমি বিক্রি, ওয়াকফ সম্পত্তিতে বহুতল নির্মাণ, প্রমোটারকে দিয়ে হুমকি তোলাবাজির অভিযোগ উঠছে এলাকায়। অভিযোগ এনওসি দেওয়ার নামে কাঠা প্রতি ২০ হাজার টাকা ও অতিরিক্ত ট্রেড লাইসেন্স ফি নেওয়া হচ্ছে। গীতাঞ্জলি প্রকল্পেও ভুরিভুরি অভিযোগ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। স্বচ্ছল ব্যক্তিদের পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে গীতাঞ্জলি প্রকল্পের ঘরবাড়ি। একই ব্যক্তির নামে ইন্দিরা আবাসন, গীতাঞ্জলি, প্রধানমন্ত্রী যোজনার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। আবার একই পরিবারের দু'জনের নামে গীতাঞ্জলির টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
এই গ্রাম পঞ্চায়েতেই বিদ্যালয়ের পাশের জমিতে প্রোমোটিং করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিদ্যালয়ের দেওয়ালের সঙ্গেই বহুতল নির্মাণ হচ্ছে। বিরোধী সদস্য থেকে শুরু করে দলের অন্দরেই এই সব নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। সদস্যদের অভিযোগ, বাঁকড়া সব্জি বাজার তুলে দিয়ে অবৈধ্যভাবে বহুতল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এলাকায় একটি ফুটবল মাঠকে বেআইনিভাবে দখল করার অভিযোগও প্রধানের বিরুদ্ধে।
প্রধান আকতার হোসেন মোল্লা জানিয়েছেন, বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছেন। এই পাঁচ বছরে নানা উন্নয়ন হয়েছে এলাকায়। এলাকা ঘুরে দেখলেই বুঝে পারবেন, ঢালাই রাস্তা থেকে শুরু করে আলোকসজ্জা, সৌন্দর্যায়ন, সবুজায়ন হয়েছে।
পানীয় জলের পাম্প বসেছে। এলাকায় একাধির গাড়োয়াল তৈরি হয়েছে। নিজের বাড়ির সামনে পুকুর ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু গাড়োয়াল তৈরির জন্য পঞ্চায়েতের টাকা বরাদ্দ হয়েছে, বিরোধীরা রটাচ্ছে, পুকুর ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে পঞ্চায়েতের টাকা। সম্পূর্ণ মিথ্যা এসব অভিযোগ। এসবের কোনও ভিত্তি নেই।