কেন পর পর ৩ মেয়ে, কেন একটাও ছেলে দিতে পারবে না বাড়ির বউ? প্রশ্নটা ওঠে আজও
আজও এমন প্রশ্ন শুনতে হয় একজন গৃহবধূকে—কেন একটা ছেলে দিতে পারবে না বাড়ির বউ? পর পর তিন মেয়ে কেন হবে?
হুগলি, ১৭ মার্চ : আজও এমন প্রশ্ন শুনতে হয় একজন গৃহবধূকে-কেন একটা ছেলে দিতে পারবে না বাড়ির বউ? পর পর তিন মেয়ে কেন হবে? না, শুধু প্রশ্ন তুলেই ক্ষান্ত থাকেনি জটিলা-কুটিলারা। রাস্তায় ফেলে লাঠি-রড দিয়ে মারধর করে বধূকে ঘাড়ধাক্কা দেওয়া হয়েছে বাড়ি থেকে। সেইসঙ্গে ফুটফুটে তিন মেয়েকেও তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিন মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি পরিত্যক্ত বধূর স্থান হয়েছে হাসপাতালের শয্যায়।
হুগলির চাঁপদানির ঘটনা। শরীর জুড়ে যা ক্ষত, তার থেকেও বেশি ক্ষত তৈরি হয়েছে মনে। চন্দননগরের হাসপাতালে বেডে শুয়ে বলছিলেন সীমা মালাকার। এখনও কেন মোয়ে হলে গঞ্জনা শুনতে হয়? মেয়ে বলে কি মানুষ নয়! ছেলে হয়নি এই তাঁর 'অপরাধ'। তাই একেবারে ঘাড়াধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হল। প্রতিদিনই অত্যাচার হচ্ছিল, এবার তা মাত্রা ছাড়িয়ে গেল।
বাড়িতে চিলেন না স্বামী মুকেশ মালাকার। সেই সুযোগেই শাশুড়ি-ননদের অত্যাচার মাত্রা ছাড়ায় বলে অভিযোগ। মুকেশ পেশায় হকার। তিনও জানতেই স্ত্রী-র উপর অত্যাচারের কথা। কিন্তু স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র সংসার পাতার মতো সম্বল ছিল না। তাই এই সংসারেই পড়েছিলেন। কিন্তু তার জন্য যে স্ত্রী-মেয়েদের মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে ভাবেননি।
অভিযোগ জানানো হয়েছে থানায়। কিন্তু পুরো একটা দিন কেটে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। আগেও জানানো হয়েছিল পুলিশকে। তখনও কিছুই করেনি থানা। এদিকে সীমার শাশুড়ি বৌমার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনিও অসুস্থ বলে দাবি করে হাসপাতালে ভর্তি বর্তমানে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হুগলি পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন।