৪০ বছর পর বামেদের হাতছাড়া, জঙ্গিপুর পুরসভার দখল নিল তৃণমূল
জঙ্গিপুর, ২৩ জুলাই : চার দশক ধরে কংগ্রেসের রবিনহুড অধীর চৌধুরীর খাসতালুক মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর পুরসভা দখল করে রেখেছিল বামেরা। কংগ্রেসের সুসময়েও সেখানে দাঁত ফোটাতে পারেনি কেউ। তবে এবার আর ধরে রাখা গেল না। পরিবর্তনের সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসে কয়েকমাসের মধ্যেই জঙ্গিপুর পুরসভা হাতছাড়া হয়ে গেল বামেদের।
এদিন পুরসভার মোট ১২ জন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পুরসভা তৃণমূলের দখলে চলে এল। জানা গিয়েছে, বামেদের ৭ জন, কংগ্রেসের ৪ জন ও বিজেপির একজন কাউন্সিলর এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
এর পাশাপাশি মুর্ষিদাবাদ জেলা পরিষদের ৩ জন সদস্যও এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনাপ্রসঙ্গে প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে পুলিশের মদতে বিরোধীদের দলে টানার কাজ চলছে। অন্যদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও গোটা ঘটনাকে তৃণমূলের চক্রান্ত বলেই দেগেছেন। তাঁর মতে, "দখলদারির রাজনীতি করছে তৃণমূল। হয় জেলে যাও নাহলে আমার দলে আসো। এভাবে বেশিদিন চলতে পারে না।"
এদিন পুরসভার চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম সহ ১২ জন কাউন্সিলর শাসক দলে যোগ দেন। এদিন দুপুরে তৃণমূল যুব সংগঠনের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে এরা প্রত্যেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন। বামদের পুরবোর্ড থেকে ১২টি ওয়ার্ড দখলে এল তৃণমূলের। ফলে ২১ ওয়ার্ডের জঙ্গিপুর পুরসভা এখন তৃণমূলের।
ঘটনা হল, সম্প্রতি হওয়া বিধানসভা ভোটে সারা রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোট হলেও মুর্শিদাবাদে জোট হয়নি। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গিপুর বিধানসভা ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে জয়লাভ করেন তৃণমূলের জাকির হোসেন। মোট ৪টি বিধানসভা আসনও পায় তৃণমূল।
এরপরই গোটা মুর্শিদাবাদেই বিরোধী নেতাদের মধ্যে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। পুরসভা, পঞ্চায়েত হোক অথবা জেলা পরিষদ, ধীরে ধীরে সবকিছু তৃণমূলের দখলে আসবেন বলে দাবি করেছিলেন জাকির হোসেন। এখন পরিস্থিতি সেদিকেই গড়াতে শুরু করেছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।