ভাঙতে ভাঙতে গড়তে ভুলে গিয়েছিল বাংলা, মন কলূষমুক্ত করার আহ্বান মুখ্যমন্ত্রী মমতার
ভাঙতে ভাঙতে গড়তেই ভুলে গিয়েছিল বাংলা। রাজ্যের মা-মাটি-মানুষের সরকার ফের সেই গড়ার কাজ শুরু করেছে। বিগত বামফ্রন্ট সরকারকে বিঁধে তিনি বলেন, ভাঙচুর নয়, গড়তে হবে।
কলকাতা, ২০ ফেব্রুয়ারি : ভাঙতে ভাঙতে গড়তেই ভুলে গিয়েছিল বাংলা। রাজ্যের মা-মাটি-মানুষের সরকার ফের সেই গড়ার কাজ শুরু করেছে। বিগত বামফ্রন্ট সরকারকে বিঁধে তিনি বলেন, ভাঙচুর নয়, গড়তে হবে। এটাই বাংলার গৌরব। লোভ সংবরণ করতে হবে।' জ্বালিয়ে দাও-পুড়িয়ে দাও রাজনীতি তিনি বরদাস্ত করবেন না। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, 'ক্ষোভ থাকলে জানান, ভাঙচুর করবেন না।' এদিনের মঞ্চ থেকে বাগুইআটির স্কুল নতুন করে গড়ে তোলার ঘোষণাও করেন মুখ্যমন্ত্রী।["সোয়াইন ফ্লু হয় মশার কামড় থেকে" : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, দূষণ শুধু রাস্তাতেই নয়, দূষণ মনুষের মনে। মানুষের মন দূষণমুক্ত করতে হবে। এত কীসের লোভ, কেন স্কুলে হাত? স্কুলে হাত, তিনি বরদাস্ত করবেন না। ভালো কাজকে প্রচারের আলো দিন। আমরা তার পক্ষে। তাই আমরা ওই স্কুল ফের গড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষা দফতরকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি চান, নেতিবাচক নয়, ভাবনা হোক ইতিবাচক। নিজের বাড়ি ভাঙলে যেমন গায়ে লাগে, অন্যের বাড়ি ভাঙতে গেলেও সেই অনুভূতির দরকার। সেইসঙ্গে বলেন, আমরা অন্যায় করব না, অন্যায় করতেও দেব না।[রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার]
এদিন ক্রীড়াবিদদের কৃতিত্বকে সম্মান প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আশ্বাস দিলেন, ক্রীড়াক্ষেত্র বাংলা পিছিয়ে যাবে না। বাজেটে ক্রীড়াক্ষেত্রে ৪৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগে কোনও সরকার ক্রীড়াক্ষেত্রে আলাদা করে বরাদ্দ করেনি। আমাদের সরকার বাংলার ক্রীড়াজগতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নতুন পরিকল্পনা করছে। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এদিন শোনা গেল- 'খেলব, লড়ব, জিতব' স্লোগান।[মুখ্যমন্ত্রীর উপরে অভিমানে দল ছাড়লেন এই প্রাক্তন তৃণমূল মন্ত্রী]
বাংলায় নতুন ক্রীড়ানীতি তৈরি করা হয়েছে। ২৩টি নতুন যুব আবাস তৈরি করা হয়েছে। ৯২২টি কম্পিফটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ১৩টি ক্লাবকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি ক্লাবকে ৫০ লক্ষ টাকা কর অনুদান দেওয়া হয়েছে। তৈরি হয়েছে ১৫টি স্টেডিয়াম। এসবই হয়েছে খেলার মানবৃদ্ধির জন্য।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, খেলাধূলা মনকে প্রসারিত করে। তাই আমরা খেলাধূলার উপর জোর দিচ্ছি। অসামাজিক ক্রিয়াকলাপ রুখতে খেলাধূলার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। মোবাইলের যুগে মুক্ত আকাশ দেখাতে এই খেলাধূলাই হবে হাতিয়ার। তিনি বলেন, রাজ্যে ৪৬টি স্টেডিয়ামের সংস্কার করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে সল্টলেক স্টেডিয়াম, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়াম।
বাংলা বহু কৃতী খেলোয়াড় রয়েছে। তাঁদেরকে কাজে লাগানো হবে নতুন প্রতিভা, নতুন প্রজন্মকে তুলে আনার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাঁরা পরামর্শ দেবেন। এটা ঠিকই যে নোট বাতিলের ধাক্কায় স্পনসর কমেছে। তবু তাঁর সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে, প্রতিকূলার মধ্যেও ইতিবাচক চিন্তাভাবনার মাধ্যমে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।