সাসপেন্ড হবেন জেনেই কি মাথা নোয়ালেন না দলে 'কোণঠাসা' মানস ভুঁইয়া?
কলকাতা, ১৪ জুলাই : তিনি কংগ্রেস বিরোধী কোনও কাজ করেননি। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী ও কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে ভুল বুঝিয়ে বিপথে চালিত করতে চাইছেন। এমনটাই অভিযোগ করে আসছেন কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া। [মান্নান, অধীরের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ মানসের]
এদিনও তিনি অধীরবাবুকে এসএমএস করে বিধানসভার রুল বুক পড়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। সেখানে স্পষ্ট লেখা রয়েছে বিধানসভার বিরোধী দলের কারওরই পিএসি পদ প্রাপ্য। সেক্ষেত্রে তিনি কংগ্রেস বিধায়ক হয়ে যদি এই পদ পান তাহলে আপত্তির কি রয়েছে? প্রশ্ন তুলেছেন সাতবারের এই কংগ্রেস বিধায়ক। [পদ না ছাড়লে সাসপেন্ড করা হবে, হাইকম্যান্ডের বার্তা মানসকে!]
কংগ্রেস নেতৃত্বের বারণ সত্ত্বেও কেন মানস ভুঁইয়া পদ গ্রহণ করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই বিষয়েও তিনি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিধায়ক হিসাবে তিনি হাজারবার দেখা করতে পারেন।
এছাড়া তিনি আরও জানিয়েছেন, পিএসি পদ নিয়ে তাঁকে যত ইচ্ছে গালাগালি দেওয়া হোক তবে অধ্যক্ষকে যেন কেউ অপমান না করেন। কংগ্রেস নেতাদের অপমানের জবাবে অধ্যক্ষের কাছে করজোড়ে ক্ষমাও চেয়ে নেন মানস ভুঁইয়া।
এই গোটা ঘটনাটি দেখে কিছু প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে। মানসবাবু প্রথম থেকেই সিপিএম তথা বামেদের বিরুদ্ধে জোটের বিরোধিতা করেছিলেন। জোট সফল না হলেও মানসবাবু জিতেছেন কিন্তু জোটের পক্ষে থাকা মুখগুলির কাছে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন ধীরে ধীরে।
আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে আসরে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মানসবাবুকে পিএসি পদ দিয়ে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে দলে কোণঠাসা মানসবাবু এই পদ আঁকড়ে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন। কারণ তাঁর মনে হয়েছে, তিনি দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।
আবদুল মান্নান বা অধীর চৌধুরীরা মানস ভুঁইয়ার এই দলবিরোধী অবস্থান কোনওমতেই ভালোভাবে নেননি। ফোন করে হোক বা সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে হোক, বারবার তাঁকে পদ ছাড়ার কথা জানানো হয়েছে। এখন যা পরিস্থিতি তাতে মানসবাবু পদ না ছাড়ায় আগামিকাল শুক্রবার কংগ্রেসের বৈঠকে ঝড় ওঠার সম্ভাবনা।
এই বৈঠকে মানসবাবুকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই হাইকম্যান্ডের পরামর্শ নেওয়া হবে। সেইকথা আগে থেকে জেনেই কি দলের বিরুদ্ধে গিয়ে মানস ভুঁইয়া পিএসি পদ আঁকড়ে থেকে সরকারের প্রিয়পাত্র হওয়ার চেষ্টা করছেন? নাকি সবংয়ে খুনের মামলায় মানসবাবুর নাম জড়ানোয় সরকারের বিরুদ্ধে যেতে চাইছেন না মানসবাবু?
মানসবাবুর ভবিষ্যৎ আপাতত নির্ভর করবে শুক্রবারের কংগ্রেসের বৈঠকের উপরে। সেখানেই ঠিক হবে, মানসবাবুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।