ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনেছে স্ত্রী, অপমানে আত্মঘাতী স্বামী
জামিনে মুক্ত হলেও মানসিক অবসাদ কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না কিছুতেই। শেষমেশ নিজের জীবন দিয়েই ‘মাশুল’ দিলেন ছেলেকে অপহরণে অভিযুক্ত বাবা।
কলকাতা, ১৯ নভেম্বর : নিজের ছেলেকে অপহরণের অভিযাগে হাজতবাস করতে হয়েছে তাঁকে। আবার ছেলেকে অপহরণের সেই অভিযোগ এনেছেন খোদ স্ত্রী-ই। জামিনে মুক্ত হলেও মানসিক অবসাদ কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না কিছুতেই। শেষমেশ নিজের জীবন দিয়েই 'মাশুল' দিলেন ছেলেকে অপহরণে অভিযুক্ত বাবা। মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন সুজয় অধিকারী।
রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা সুজয় অধিকারী। শুক্রবার তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয় ঘর থেকে। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন সুজয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, পুলিশি প্রভাব খাটিয়ে সুজয়ের বিরুদ্ধে ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ আনা হয়। সর্বাণীর মা বাগুইআটির ওসির বাড়িতে কাজ করেন ৷ সেই প্রভাব খাটিয়ে বাগুইআটির ওসিকে দিয়ে ফোন করে ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরে সুজয় জানতে পারেন বাগুইআটি থানায় ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনেছে তাঁর স্ত্রী। এরপর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরই মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হন তিনি। মৃতের স্ত্রী, শ্বশুর বাড়ির সদস্য ও বাগুইআটির ওসি-র বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে সুজয়ের পরিবার ৷
পেশায় ভিডিও রেকর্ডিস্ট সুজয় ছ'বছর আগে বাগুইআটির বাসিন্দা সর্বাণীকে বিয়ে করে। তাঁদের একটি চার বছরের ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে না থেকে সর্বাণী বেশিরভাগ সময় বাপের বাড়িতেই থাকতেন। শখ ছিল থিয়েটার করার। পুজোর সময় সেই যে ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি গিয়েছেন, ফিরে আসেননি আর। সুজয় স্ত্রীকে আনতে গিয়ে ফিরে আসেন। ছেলেকে স্বামীর সঙ্গে পাঠিয়ে দেন সর্বাণী। সুজয়ের বাড়ির লোকের অভিযোগ, হঠাৎ ভাইফোঁটার দিন বাগুইআটির ওসি সুজয়কে ফোন করে ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে। সুজয় রাজি না হওয়ায় ওইদিনই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। আর তারপর জামিন পেয়ে বাড়ি ফেরার পরই ঘটে যায় মর্মান্তিক এই ঘটনা।