'বঙ্গ' নয় রাজ্যের নাম হচ্ছে 'বাংলা', ছাত্র পরিষদের সভায় ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রী মমতার
কলকাতা, ২৬ অগাস্ট : পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে দেওয়ার বিলে ইতিমধ্য়ে সায় দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রিসভা। এইমাসের শুরুতেই মন্ত্রিসভার নির্বাচিত সদস্যরা ঠিক করেন, ইংরেজিতে রাজ্যের নাম হবে Bengal। এবং বাংলায় পশ্চিমবঙ্গের নতুন নাম হবে 'বঙ্গ' অথবা 'বাংলা'। তবে এই দুটির মধ্যে কোন নামটি শেষ পর্যন্ত বেছে নেওয়া হবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব, মতানৈক্য ছিল। [পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল নিয়ে কে কি বলছেন?]
সংবাদমাধ্যমে যেসমস্ত বক্তব্য নেওয়া হয়েছিল, সেখানে গুণী মানুষ থেকে শুরু করে আমজনতা সকলেই দুটি ভাগে বিভক্ত ছিলেন। তবে বঙ্গ-র চেয়ে বাংলা- নামটির দিকেই যে খানিক পাল্লা ভারী ছিল তা আন্দাজ কার গিয়েছিল। এদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সভা করে এই বিষয়ে একপ্রকার গণভোট নিয়ে নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখান থেকে যা উঠে এল, তাতে একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই বলা যায় যে, আগামিদিনে বাংলায় রাজ্যের নাম হতে চলেছে 'বাংলা'-ই।
এদিন সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে মমতা প্রথমে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনায় সরব হন। বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্র সরকার যেভাবে রাজ্যকে বঞ্চনা করছে ও রাজ্যের বিষয়ে নাক গলাচ্ছে তার তীব্র বিরোধিতা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে রাজ্যের বাম-কংগ্রেস জোটেরও কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। মমতার অভিযোগ, বামেরা রাজ্যে ও কংগ্রেস কেন্দ্রে দীর্ঘদিন সরকারে থেকেও কোনও উন্নয়ন করেনি। রাজ্যকে পিছিয়ে দিয়েছে।
এসবের পাশাপাশি এদিন ছাত্র-যুবদের মাঝে বক্তৃতা রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলা যায় একপ্রকার গণভোটই নিয়ে ফেললেন রাজ্য়ের নামবদলকে কেন্দ্র করে। ইংরেজিতে রাজ্যের নাম তো Bengal হবে তা একপ্রকার ঠিক হয়েই গিয়েছে। তাই বাংলায় রাজ্যের নাম কি হবে তা একেবারে সরাসরি সামনে থাকা ছাত্র-যুবদের জিজ্ঞাসা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রথমে জিজ্ঞাসা করেন, 'বঙ্গ' নামটিতে কার কার সায় রয়েছে। সেভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি এই ডাকে। সামান্য কয়েকজনই হাত তুলে মমতাকে ইঙ্গিত করেন। এরপরে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞাসা করেন, 'বাংলা' নামটিতে কার কার সায় রয়েছে? এই প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গেই মেয়ো রোডে উপস্থিত ছাত্র-যুবদের অধিকাংশ হাত তুলে চিৎকার করে এই নামে সায় জানান। এমনকী মঞ্চের পিছনে বসা থাকা রাজ্য়ের তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকে, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ অনেকেই চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে উঠে হাত নাড়তে থাকেন।
সব দেখে হেসে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। অর্থাৎ তিনি নিজেও যে এই নামটিতেই সায় দিয়েছেন মনে মনে তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে যায় তাঁর মুখের চাহনিতেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও মঞ্চ উপস্থিত লেখক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুরীতে কাছে ডেকে নেন মমতা। সকলের সামনেই জিজ্ঞাসা করেন, কোন নামটি রাখা ঠিক হবে। তিনিও একবাক্যে 'বাংলা'-র পক্ষ্যেই মত দেন। ফের একবার নিজে থেকেই হেসে ওঠেন মমতা। আর তাঁর হাসিতে স্পষ্ট ছিল, এবারের বিধানসভা অধিবেশনেই রাজ্যের নাম সংক্রান্ত বিল পাশ করিয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।