শক্তি প্রদর্শনে পাল্টা মিছিল তৃণমূলের, কেন এসেছেন, জানেন না অনেকে
ভিড় যাতে ভালো হয়, সেই জন্য চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। শহরতলি থেকেও ট্রেনে, বাসে, ম্যাটাডোরে মানুষজন এসেছেন। স্কুলপড়ুয়াদেরও হাঁটতে দেখা গিয়েছে মিছিলে। হাতে ছিল নানা ব্যানার, পোস্টার।
মজার ব্যাপার হল, অনেকের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গিয়েছে, আগমনের কারণ নিয়ে তাঁরা সম্যক ওয়াকিবহাল নন।
আরও
পড়ুন:
সিপিএম,
বিজেপি
নয়,
তৃণমূলের
'দুশমন'
এখন
যাদবপুরের
পড়ুয়ারা
আরও
পড়ুন:
যাদবপুর-কাণ্ডের
ঢেউ
মুম্বই,
দিল্লি,
ব্যাঙ্গালোরে,
পথে
নামলেন
পড়ুয়ারা
সিঙ্গুর থেকে এসেছেন রতন পাল। ৪৫ বছরের রতনবাবুকে জিজ্ঞাসা করা হল, "কেন এসেছেন মিছিলে, জানেন?" জবাব এল, "শুনলাম যাদবপুরে পুলিশকে মেরেছে।" কে মেরেছে, জিজ্ঞেস করাতে বললেন, "সিপিএমের লোকেরা।" আর কিছু বলতে পারলেন না।
ভাঙড় থেকে আগত যুবক মইদুল মণ্ডলের জবাব, "অত কিছু জানি না। আরাবুলদার লোক এসে বলল, সোমবার মিছিল হবে। যাস। চলে এলাম। আমরা গরিব মানুষ। অত জেনে কী করব?" কোন কলেজে পড়েন? এ বার যেন হাঁ-হাঁ করে উঠলেন। বললেন, "কলেজ!! পড়াশুনো বড়লোকদের জন্য। আমি বাড়িতে রঙ করতে যাই।"
হুগলী থেকে এসেছেন মৌমিতা হাজরা। বয়স তিরিশের কোঠায়। সঙ্গে আরও কয়েকজন সমবয়সী মহিলা। বললেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের মিটিংয়ে সিপিএমের লোকেরা হামলা করেছে। মা-মাটি-মানুষ যে উন্নয়নের কাজ করছে, তাকে বন্ধ করতে এ সব করা হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করতেই এসেছি।" আরও জানান, বাড়ি যাওয়ার আগে একবার চাঁদনি চকের বাজার ঘুরে যাবেন। সস্তায় জিনিস কিনবেন কিছু।
আরামবাগের গ্রাম থেকে আসা সুশান্ত সাধুখাঁর সঙ্গে কথা হল। বললেন, "শুনলাম, শনিবার কলেজের ছেলেরা একটা মিছিল করেছিল। অনেক গাঁজা বিক্রি হয়েছে। তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ। আগে সিপিএম ছিল, এখন বিজেপি এসেছে। দিদিকে কাজ করতে দিচ্ছে না। গ্রামের পর শহরেও বদমাইশি করছে।"
হাওড়ার বাগনান থেকে এসেছেন বাবু জানা। তিনি বলেন, "লিখে নিন, ২০১৬-তে দিদি আবার মুখ্যমন্ত্রী হবে।" কেন এসেছেন মিছিলে? জবাব দিলেন, "দিদি আসতে বলেছে শুনলাম, তাই এলাম। কারণ আপনি খুঁজুন গিয়ে।"
এ দিন অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস থেকে মিছিল শুরু হয়। যায় রাজভবন পর্যন্ত। মিছিলে টিএমসিপি রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। মিছিল শেষে ছ'জনের একটি প্রতিনিধি দল রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করতে যায়। মাত্র পাঁচ মিনিট কথা বলেন রাজ্যপাল। তৃণমূলের প্রতিনিধিরা দাবি করেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করুন রাজ্যপাল। অথচ শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিট কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কলকাতার পুরভোট সামনে। তার পরই রাজ্যের ৮২টি পুরসভায় ভোট নেওয়া হবে। তার আগে শক্তি প্রদর্শন করতেই এই পদক্ষেপ।