বাড়ছে বিজেপি, চিন্তিত মমতা রণকৌশল স্থির করতে ১ মার্চ কোর কমিটির বৈঠক ডাকলেন
বাড়ছে বিজেপি। চিন্তা বাড়ছে মমতারও। বিজেপির ক্ষমতা বৃদ্ধি ঠেকাতে তাই এখন থেকেই কোমর বাঁধছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির শক্তিবৃদ্ধিতে তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত।
কলকাতা, ১৫ ফেব্রুয়ারি : বাড়ছে বিজেপি। চিন্তা বাড়ছে মমতারও। বিজেপির ক্ষমতা বৃদ্ধি ঠেকাতে তাই এখন থেকেই কোমর বাঁধছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির শক্তিবৃদ্ধিতে তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে বিজেপির মোকাবিলায় নীতিনির্ধারণ করতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী। মার্চের পয়লাতেই তাই শীর্ষ নেতৃত্বকে বৈঠকে ডেকেছেন তিনি।[মুখ্যমন্ত্রীর উপরে অভিমানে দল ছাড়লেন এই প্রাক্তন তৃণমূল মন্ত্রী]
২০১৮-তে পঞ্চায়েত নির্বাচন রাজ্যে। তার আগে কোনও ঝুঁকি নিতে তিনি রাজি নন। বিজেপিকে ঠেকাতে তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রণকৌশল নিয়ে তিনি নির্দেশিকা স্থির করে দতে চান। সেই কারণেই এই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। শুধু নীতি নির্ধারণ নয়, দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে নির্দেশ দেবেন তিনি। সেইসঙ্গে তিনি ময়দানে নামাতে চাইছেন ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।[শিলিগুড়িতেও নতুন জেলার দাবি, পৃথক বোর্ড চায় আদিবাসী বিকাশ]
চতুর্দিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ তৃণমূল। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রতিদিনই দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। এছাড়াও মাথা চাড়া দিয়েছে তৃণমূল ও নব্য তৃণমূলের দ্বন্দ্ব। রাজ্যের প্রতিটি কোণে কোণে এই সমস্যাদীর্ণ শাসক দল। ক্ষমতার অলিন্দে থাকার জন্য, যাঁরা ভিড় জমিয়েছেন তৃণমূলে, তারা এখন আলাদা আলাদা গোষ্ঠী তৈরি করে নিয়েছেন। পুরনো তৃণমূলীরা নব্যদের এই বাড়াবাড়ি মানতে পারছেন না। তাই দ্বন্দ্ব বাড়ছে প্রতিনিয়ত।
বিরোধী দলগুলি বিশেষ করে বিজেপি সেই সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীরা উপায়ান্তর না পেয়ে ভিড় জমাচ্ছেন বিজেপিতে। আর তাতেই কপালের ভাঁজ স্পষ্ট হচ্ছে তৃণমূলের। কী করে এই চোরাস্রোত আটকানো যায়, তার দাওয়াই খুঁজতে ব্যস্ত তৃণমূল সুপ্রিমো।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুল করিমের সঙ্গে বিধায়ক কানাইলাল আগরওয়ালের বিবাদ এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে, প্রাক্তন মন্ত্রী করিম চৌধুরীকে গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই অপমান মেনে নিতে পারেননি প্রবীণ এই নেতা। শেষমেশ তিনি নিজেকে দল থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। ঘোষমা করেছেন, এখন থেকে আমি তৃণমূলের কেউ নই। অনুগামীদের সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন তিনি।
১ মার্চের দলীয় বৈঠকে এই সব প্রসঙ্গই উঠবে। উত্তরবঙ্গের সংগঠনের দিকে বিশেষ নজর দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। কেননা শুধু তো করিম চৌধুরী নন, কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর মতো ডাকসাইটে নেতাও এক ঘরে। তারপর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিজ্ঞ সাংসদ এখন জেলে। গ্রেফতার সাংসদ অভিনেতা তাপস পালও। এই সব ইস্যুতে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা এখনই স্থির করা উচিত বলে মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী জয়া দত্তের ভূমিকাতেও সে অর্থে খুশি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যা ঘটছে তাতে রীতিমতো বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী। তাই এ ব্যাপারেও কঠোর হতে পারেন সুপ্রিমো। সবদিক বিচার করেই ১ মার্চের কোর কমিটির বৈঠক বিশেষ জরুরি তৃণমূলের কাছে।