বিধানসভায় কংগ্রেসের ঘরে এসে খোশগল্পে মাতলেন মমতা, কোন পথে রাজ্য রাজনীতি?
বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললেন মমতা। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলেন। আবার কংগ্রেস বিধায়কের বিয়েতে উপহার কেনার জন্য চাঁদাও দিলেন। একটা বৈঠক পাল্টে দিল কত কিছু!
এক অভূতপূর্ব দৃশ্য রাজ্য বিধানসভায়। কংগ্রেসের ঘরে হঠাৎ আগমন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবারের বিধানসভা সাক্ষী থাকল অভাবনীয় এক সৌজন্যের। মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের ঘরে গিয়ে মাতলেন খোশ গল্পে। বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলেন। আবার কংগ্রেস বিধায়কের বিয়েতে উপহার কেনার জন্য চাঁদাও দিলেন। একটা বৈঠক পাল্টে দিল কত কিছু! তবে কি রাজ্য রাজনীতিতে জোট বদল আসন্ন! প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সুর কিন্তু সপ্তমে চড়েই।
জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী ঐক্যের খোঁজে সম্প্রতি কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর ডাক এসেছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে দিল্লিতে গিয়ে ১০ জনপথে বৈঠক করে এসেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার কলকাতায় পা রেখেই কেমন আমূল বদলে গিয়েছে সব।
শুক্রবার কোর কমিটির বৈঠকে রাজ্য কংগ্রেসের প্রতি নমনীয়তার বার্তা দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে নমনীয় ভাবেই চলতে হবে নেতাদের। মোদী বিরোধী শক্তিকে সঙ্ঘবদ্ধ করতে হবে। তার পরই বিধানসভায় গিয়ে সটান মুখ্যমন্ত্রী হাজির কংগ্রেসের ঘরে। একেবারে চমকে দেওয়ার পরিস্থিতি। কেউ ভাবেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের ঘরে আসবেন। চমকে দেবেন সবাইকে।
সবার সঙ্গেই তিনি কথা বলেন। দীর্ঘক্ষণ গল্পে মশগুল থাকেন পুরনো সঙ্গীদের সঙ্গে। বিশেষ করে আবদুল মান্নানের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। উল্লেখ্য, গতবার বিধানসভা অধিবেশনে আসতে পারেননি বিরোধী দলনেতা। বিধানসভাতেই প্রবল হই হট্টগোলের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রবীন কংগ্রেস বিধায়ক। তারপর হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। তাঁর অস্ত্রোপচারও করতে হয়। বসানো হয় পেসমেকার।
মুখ্যমন্ত্রীর এহেন পদক্ষের রাজ্যে নয়া জোট জল্পনার পারদ চড়ছে। আসন্ন পঞ্চায়েত ও লোকসভার আগে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে আটকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য দলগুলির সঙ্গে দূরত্ব কমাতে তৎপর। যে বার্তা তিনি কোর কমিটির বৈঠকে দিয়ে এলেন দলীয় নেতাদের, সেই কাজটাই নিজে করে দেখালেন মমতা। বার্তা দিলেন নিজের দলের নেতাদেরও। হাত বাড়ালেন তিনি। এবার কংগ্রেস তাঁর হাত কীভাবে ধরেন তাই দেখার।
মুখ্যমন্ত্রী যখন সৌজন্যের বার্তা দিয়ে কংগ্রেসের ঘরে এসেছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী তার আগেই দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে হাইকম্যান্ডকে বার্তা দিয়েছেন, রাজ্যসভায় সাংসদপদপ্রার্থী হিসেবে উপর থেকে কারও নাম চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। বিধায়করাই ঠিক করবেন কে হবেন প্রার্থী। এই মর্মে দলের অবস্থান জানিয়ে হাইকম্যান্ডকে চিঠিও লেখেন। পরিস্থিতি বহেগতিক বুঝেই অধীর সুর চড়াচ্ছেন। রাজ্য-রাজনীতির মোড় ঘুরছে অন্যদিকে।