হোমওয়ার্ক না করেই এত বড় সিদ্ধান্ত, কেন্দ্রের কড়া সমালোচনায় হাইকোর্ট
‘হোমওয়ার্ক ছাড়াই এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। হোমওয়ার্ক করে নামেনি বলেই দেশজুড়ে বিপর্যয় নেমে এসেছে। সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রতিদিন নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।’
কলকাতা, ১৮ নভেম্বর : 'হোমওয়ার্ক ছাড়াই এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। হোমওয়ার্ক করে নামেনি বলেই দেশজুড়ে বিপর্যয় নেমে এসেছে। সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রতিদিন নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।' নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারকে সমালোচনায় বিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গিরীশ গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারের ৫০০ ও হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে কড়া ভাষায়। এদিন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকারের করা একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষ নন। সাধারণ মানুষের কাছে কালো টাকা আসবে কোথা থেকে? অথচ সবথেকে বেশি নাকাল হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই। এই বিষয়টি আরও গুরুত্ব সহকারে ভাবা উচিত ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের।
প্রধান বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত ও বিচারপতি অরিন্দম সিনহার ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী তথা অ্যাডিশনাল সলিসিটার জেনেরাল কৌশিক চন্দের উদ্দেশে জানায়, সরকার চিকিৎসা ও পরিবহণক্ষেত্রে দুর্ভোগ কমাতে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ২৫ নভেম্বর হলফনামা আকারে পেশ করতে হবে আদালতে। ব্যাঙ্ক কর্মীদের দায়িত্ববোধ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি।
এরপর কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী আদালতে বলেন, সাধারণ মানুষ চাইলে ক্রেডিট কার্ডে টাকা জমা করতে পারে। অনলাইনে টাকা জমা দিতে পারে। বিচারপতি তাঁর কথার যৌক্তিকতা উড়িয়ে সঙ্গে সঙ্গে বলেন, তাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ মিটবে না। কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি হাসপাতালে পুরনো নোট নেওয়া হবে। বেসরকারি নার্সিংহোমের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ল্যাব, ডায়গনেস্টিক সেন্টার, ওষুধের দোকানেও। এসবই আগে ভাবা উচিত ছিল। পরে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত। মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টিও দেখাও যে সরকারের আশু কর্তব্যের মধ্যে পড়ে, তা ভুলে গিয়েছে কেন্দ্র। এদিন পরিবহণ প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি।