বিলম্বে বোধোদয়, বিমান বসুর স্বীকারোক্তি ধর্মঘট ডাকা ভুল ছিল
স্বল্প সময়ের মধ্যে বনধ ডাকা তাদের ভুল ছিল। বনধ ডাকার আগে আরও ভাবা উচিত ছিল। তা না করে তড়িঘড়ি বনধের সিদ্ধান্ত নেওয়া তাঁদের ঠিক হয়নি।
কলকাতা, ২৮ নভেম্বর : ধর্মঘট ব্যর্থ হয়েছে। বন্ধ ডাকা তাদের ঠিক হয়নি। অবশেষে ভুল স্বীকার করে নিল বামফ্রন্ট। বামেদের বোধোদয় হল বিলম্বে। সোমবার ১৮ বামপন্থী দলের ডাকা বনধ শোচনীয় ব্যর্থ হওয়ার বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর স্বীকারোক্তি, স্বল্প সময়ের মধ্যে বনধ ডাকা তাদের ভুল ছিল। বনধ ডাকার আগে আরও ভাবা উচিত ছিল। তা না করে তড়িঘড়ি বনধের সিদ্ধান্ত নেওয়া তাঁদের ঠিক হয়নি।
শোচনীয় ব্যর্থ হয়ে এহেন অসহায় স্বীকারোক্তি করা ছাড়া আর অন্য কোনও পথ ছিল না বামফ্রন্টের। তাই এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বিমানবাবু বললেন, ভবিষ্যতে এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তবে বনধ ব্যর্থ হলেও নোট বাতিলের জেরে মানুষের দুর্ভোগের প্রতিবাদ করার পথ থেকে সরে আসছে না বামফ্রন্ট। সম্মিলিতভাবেই তাঁরা কেন্দ্রের জনবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হবেন।
এদিন তিনি নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করলেন কড়া ভাষায়। তাঁর কটাক্ষ, মোদিজি বলেছেন, ১০০ কোটির হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানেনই না, একজন সাংসদের হাতেই একাধিক মোবাইল ফোন রয়েছে। এই তথ্য একেবারেই মিথ্যা। এখনও দেশের অনেক মানুষের কাছেই মোবাইল পৌঁছয়নি। আর প্রধানমন্ত্রী চাইছেন, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ক্যাশলেস পরিষেবা চালু করতে। যেটা অসম্ভব।
কোনও প্রস্ততি ছাড়াই ৫০০ ও হাজার টাকার নোট বাতিল করে দিয়েছে কেন্দ্র। যার জেরে দেশজুড়ে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ১৪ লক্ষ কোটি টাকা বাতিল ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সম পরিমাণ টাকা নেই। তিন সপ্তাহ অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। টাকার জোগান পর্যাপ্ত হয়নি ব্যাঙ্ক বা এটিএমগুলিতে।
এমতাবস্থায় বিরোধীরা এক যোগে আন্দোলনে সামিল হয়। বিজেপি বিরোধিতার সামিল হয় কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও। এমনকী বামেরাও এই বিরোধী আন্দোলনের অঙ্গ ছিল। কিন্তু আক্রোশ দিবসে হঠাৎ করেই বনধ ডেকে বসে বামপন্থী ১৮টি দল। সেই বনধ চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়। এখন সেই ব্যর্থ বনধ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে চাইছেন বিমান বসু-রা।
বামেদের বিলম্বে বোধোদয়ের পর তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিলম্বে হলেও তাহলে বোধোদয় হল। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী সিদ্ধান্তের জেরে মানুষ যখন ভোগান্তির শিকার, তখন ভোগান্তি বাড়াতে বনধ যে আন্দোলনের ভাষা হতে পারে না, দেরিতে বুঝলেন বিমানবাবুরা।
মানুষ আজ তাদের যোগ্য জবাব দিয়েছে। মানুষ আর বনধ চান না। প্রমাণ হয়ে গিয়েছে এই সিদ্ধান্ত হাস্যকর ছিল। বিজেপি নেতা শমীক ঘোষ বলেন, আর কত শিক্ষা নেবেন বিমানবাবুরা। একটার পর একটা ভুল করেছেন, আবার ভুল স্বীকার করেছেন। শুধু বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করলে মানুষ মেনে নেবেন না।