‘কেয়ারটেকার’ কবিতা রায়-হত্যাকাণ্ডে যোগ নারী পাচার চক্রের? মোবাইলেই সূত্র খুঁজছে পুলিশ
সোনগাছিতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মহিলা ‘কেয়ারটেকার' খুনের ঘটনায় তবে কি হাত নারী পাচার চক্রের? তদন্ত নেমে পুলিশের সামনে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কলকাতা, ৩ নভেম্বর : সোনগাছিতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মহিলা 'কেয়ারটেকার' খুনের ঘটনায় তবে কি হাত নারী পাচার চক্রের? তদন্ত নেমে পুলিশের সামনে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্বেচ্ছাসেবীর সংস্থার সদস্যদের জেরা করে পাওয়া তথ্য থেকে খুনের ঘটনায় নতুন সূত্র পেয়েছে পুলিশ। সেই সূত্র মেলাতে এখন বড় ভরসা মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল। নিখোঁজ দুই কিশোরী উদ্ধার করলে অনেক সূত্র মিলিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
বুধবার সকালে উত্তর কলকাতার নিষিদ্ধপল্লির কাছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিস থেকে উদ্ধার হয় কবিতা রায়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ। তাঁকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ভারী কোনও বস্তু দিয়ে মুখ থেঁতলে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ দুই কিশোরীই। ওই দুই কিশোরী উদ্ধারের পর নিহত কবিতা রায়ের তত্ত্বাবধানেই ছিল। স্বভাবতই ঘটনায় উঠে এসেছে নারী পাচার চক্রের যোগসূত্র। কারণ, দিন কয়েক আগেই বউবাজার থেকে উদ্ধার করা হয় ওই দুই কিশোরীকে।
তাদের পাচার করার উদ্দেশে আনা হয়েছিল। পাচারকারীদের চক্রান্ত ভেস্তে দিয়ে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উদ্ধার করে কিশোরীদের। তাদের সংস্থার অফিসে রাখা হয়। বুধবার তাদের আদালতে পেশ করার কথা ছিল। তার আগেই সোনাগাছিতে ঘটে যায় নির্মম খুনের ঘটনা। তবে কি পাচারকারীরাই কেয়ারটেকারকে খুন করে দুই কিশোরীকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে ফের?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই কিশোরী উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর বাসিন্দা। দুই নাবালিকাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কলকাতায় এনেছিল দুই যুবক। তারপর তাদের বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ তাদের উদ্ধার করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি নিজেদের অফিসে নিয়ে আসে। পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহত কবিতা রায় মঙ্গলবার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্মী ভারতী দে-কে ফোন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, 'মেয়ে দুটি এখানে থাকতে চাইছে না। ওরা চাবি চাইছে।' এরপরই কবিতা খুন হন এবং রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায় মেয়েগুলি।
স্বভাবতই
প্রশ্ন
ওঠে,
ওরা
যেহেতু
এখানে
থাকতে
চাইছিল
না,
তবে
কি
চাবি
কেড়ে
নিয়ে
কেয়ারটেকারকে
খুন
করে
দুই
কিশোরী
পালিয়ে
যায়?
নাকি
অন্য
কারও
হাত
রয়েছে
এই
খুনের
ঘটনা।
হিসাব
মেলাতে
অবলম্বে
দুই
কিশোরীর
খোঁজ
পেতে
চাইছে
পুলিশ।
প্রথমে
তদন্তকারীরা
মেয়েগুলি
অপহৃত
হয়েছে
বলেই
মনে
করে
পুলিশ।
কিন্তু
একটার
পর
একটা
ভিন্ন
তথ্য
সামনে
এসে
পড়ায়,
দুই
কিশোরীকেও
সন্দেহের
তাড়িকায়
রাখছে
পুলিশ।
পুলিশ এও জানতে পেরেছে, জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা দুই যুবক তাদের কলকাতা নিয়ে এসেছিল। ফেসবুকের মাধ্যমেই তাদের যোগাযোগ হয়। তারপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কলকাতায় আনা হয় দুই কিশোরীকে। ওই দুই যুবকেরও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশের কাছে সবচেয়ে বড় ক্লু হয়ে উঠেছে মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি মোবাইল ফোন। সেই ফোনের সূত্র ধরেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে পুলিশ।