'পিএসি পদ ছাড়ুন', মানস ভুঁইয়াকে শেষ হুঁশিয়ারি দিল প্রদেশ কংগ্রেস
কলকাতা, ৯ জুলাই : সাসপেন্ড বা অন্য কোনও কড়া পদক্ষেপের আগে বিধায়ক মানস ভুঁইয়াকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার শেষ দফা সুযোগ করে দেওয়া হল। এদিন প্রদেশ কংগ্রেসের পরিষদীয় কমিটি ও অন্য নেতৃত্বকে নিয়ে বসা বর্ধিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী জানান, মানস ভুঁইয়া জানিয়েছিলেন, সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সেজন্য এদিনের বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। এবং সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে পিএসি-র পদটি মানস ভুঁইয়াকে ছাড়তে হবে। হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা জোটসঙ্গী সিপিএমকে দেওয়া নিয়ে হওয়া সিদ্ধান্তে কমিটি অনড় রয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের কথা মানসবাবুকে জানিয়ে দেওয়া হবে। পিএসি পদ থেকে যাতে মানসবাবু ইস্তফা দেন সেজন্য বিধানসভার সমস্ত কংগ্রেস বিধায়কদের সই করা একটি আবেদন তাঁর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। তারপরে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা তিনি নেবেন। তার ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে। মুখে অনুরোধ বলা হলেও এটি হুঁশিয়ারি বলেই মত ওয়াকিবহা মহলের।
অধীর চৌধুরী জানান, রাজ্যের কংগ্রেস-বাম জোটকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে শাসক তৃণমূল। এছাড়া এমন কাউকে সরকার চাইছে যিনি সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করতে না পারেন। সেজন্যই মানসবাবুকে দিয়ে কংগ্রেসে ভাঙন ধরানোর খেলায় মেতেছে তারা। সেটা যাতে না করতে পারে সেজন্য মানসবাবুকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে পদটি ছাড়ার জন্য। এখন দেখার তিনি কী সিদ্ধান্ত নেন।
পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানের পদটি মাত্র একবছরের পদ। সামনের বছর এই পদটি মানসবাবুকে দেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু তৃণমূল কায়দা করে মানসবাবুর নাম চেয়ারম্যান হিসাবে ঘোষণা করে দলের মধ্যে বিরোধ তৈরির চেষ্টা করছে বলে মত অধীরবাবুর।
তাঁর কথায়, হাইকম্যান্ডের মত নিয়েই পিএসি পদটি বামেদের ছাড়া হয়েছে। এরপরে মানসবাবু পদ না ছাড়তে চাইলে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা হাইকম্যান্ডই নেবে। তাঁরা শুধু নির্দেশ পালন করছেন বলেই দাবি করেছেন প্রদেশ সভাপতি।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এখুনি মানসবাবুকে সাসপেন্ড করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সেজন্য়ই তাঁকে শেষবার সুযোগ করে দেওয়া হল। আবার এটাও বার্তা দেওয়া গেল যে, শীর্ষ নেতৃত্বের কথা শুনেই সকলকে চলতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলাই শেষ কথা, না হলে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে।
এদিনের পরে ফের ১৫ জুলাই কংগ্রেসের প্রদেশ নেতৃত্বের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ততদিনে মানস ভুঁইয়ার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাছাড়া আগামিদিনে রাজ্য রাজনীতিতে কীভাবে পথ চলা হবে সেবিষয়েও সেই বৈঠকে আলোচনা হবে প্রদেশ সভাপতি বলে জানিয়েছেন।