কেডি-কে নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত, কুণালের অবস্থা হবে না তো?
অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতেই দলে থেকে তাঁকে দূরে করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। হতে পারেন তিনি এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু দল তাঁকে অস্বীকার করেই চলেছে।
কলকাতা, ২৮ মার্চ : অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতেই দলে থেকে তাঁকে দূরে করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। হতে পারেন তিনি এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু দল তাঁকে অস্বীকার করেই চলেছে। অ্যালকেমিস্ট কর্ণধার কেডি সিং-এর অবস্থাও তাই হতে পারে কুণাল ঘোষের মতো। অদূর ভবিষ্যতে তাঁর পরিচয়ও হয়তো হতে চলেছে তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ।
এখন রাজনৈতিক মহলে সবথেকে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, কেডি কোন দিকে? তৃণমূলের অভিযোগই সত্য? নাকি নারদে অস্বস্তি বাড়তেই কে ডি-কে দূরে সরানো তাঁদের পুরনো চাল? এখন কে ডি সিং বিজেপি ঘনিষ্ঠ বা সিপিএমের সঙ্গে ছিল বলে দায় এড়ানোর খেলায় মেতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তা নিয়েই চলছে চাপানউতোর। তৃণমূল কে ডি-কে কখনও ঠেলছে বিজেপি-র কোর্টে, কখনও সিপিএমের কোর্টে।
আবার সিপিএম কে ডি-র সঙ্গে সখ্যতার দায় ঝেড়ে ফেলে তা ফিরিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের ঘাড়েই। যুক্তি দেখানো হয়েছে আজ দীর্ঘদিন কেডি তৃণমূলের সাংসদ। এতদিন কোনও দোষ ছিল না। দলে অস্বস্তি বাড়াতেই তিনি খারাপ হয়ে গেলেন। তৃণমূল তাই তাঁকে এখন সিপিএমের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে। এখন কেডি-র বিরুদ্ধে ললাবাজারে বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত শুরু করেছে। তাঁর সম্পত্তি বিক্রি করে অ্যালকেমিস্টের গ্রাহকদের টাকা ফেরতের উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
বিজেপিও কেডি ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ সমূল উপড়ে ফেলেছে। বিজেপি-র পক্ষ থেকে দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন, কেডি সিংয়ের সঙ্গে যাবতীয় ঘনিষ্ঠতা তৃণমূলেরই। এখন তৃণমূল নেত্রী যা-ই বলুন, কেডি-কে নিয়ে তিনি দায় এড়াতে পারেন না। দীর্ঘদিন কেড তাঁর লের সাংসদ। দিলীপ ঘোষ বলেন, 'শুনেছি, কেডি-র সঙ্গে নাকি মুখ্যমন্ত্রীর পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। কেডি নাকি অভিষেকের খুড়শ্বশুর।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেডি সিং তাঁর দলের সাংসদ হলেও, বিজেপি-র সঙ্গে তিনি অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাই তাঁকে কাজে লাগিয়ে নারদ স্টিং অপারেশন চালানো হতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা। এই আশঙ্কা থেকেই কলকাতা পুলিশকে দিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে কেডি-র বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেফতার করে দায় এড়াতে চাইছে তৃণমূল। সেই পথেই কেডি-র অবস্থা হতে পারে কুণালের মতো।
সোমবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কেডি-কে তৃণমূলী প্রশ্রয়ের তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরেন। আগে যে একাধিক অভিযোগ সত্ত্বেও কেডি-র বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করা হয়নি, তা জানিয়ে দিলীপবাবু বলেন, এখন কেডি-র দোষ সামনে আসতেই তাঁকে দল থেকে ঝেড়ে ফেলতে তৎপর হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সম্প্রতি একটি ছবি প্রকাশ করেন। সেখানে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কেডি সিং ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে এক ফ্রেমে দেখা যায়। তা নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে।