#NoteBan : কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ মমতার, ২৩ তারিখ থেকে পথে নেমে প্রতিবাদ
এই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্র আর্থিক এমার্জেন্সি জারি করেছে গোটা দেশে। নিজেরা চূড়ান্তভাবে কনফিউসড। কী করতে হবে নিজেরা জানে না। এর পিছনে কি লুকনো অ্যাজেন্ডা রয়েছে জানতে চেয়েছেন মমতা।
কলকাতা, ২১ নভেম্বর : ফের কেন্দ্রকে নোট বাতিল বিতর্কে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালো ধন আরও কালো হয়েছে। আর নোট বাতিল করে সাধারণ মানুষকে পথে বসিয়েছে কেন্দ্র। এর বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যাবেন তিনি। এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে হুঙ্কার ছাড়লেন মমতা।
'পুরোটাই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র', চিটফান্ড নিয়ে মোদীর খোঁচার পাল্টা জবাব মমতার
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নোট বাতিলের ফলে ১৪ লক্ষ কোটি টাকার সাপ্লাই মানি বাতিল করা হয়েছে। কৃষক, মজদুর, মহিলা, গরিব মানুষদের হয়রান করা হয়েছে। জনগণের সাদা টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র। ৫০০ ও ১ হাজারে নোট বাজারের ৮৬ শতাংশ দখল করে রেখেছিল। তা বাতিল করায় সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন।
মমতা এদিন বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তিনি ভোটের লড়াই লড়তে বা রাজনীতি করতে ময়দানে নামেননি। তাঁর কথায়, এটা আমাদের ইগোর লড়াই নয়। তবে কৃষকেরা চাষ করতে পারছেন না। এই সিদ্ধান্ত তুলে না নিলে আগামী একবছরে দুর্ভিক্ষ হয়ে যাবে। চাষীরা ধান কাটতে পারছে না। নিজেরা খেতে পাচ্ছে না।
মমতার অভিযোগ, কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থায় পুরনো নোট বাতিল করার নিয়ম করেছে মোদী সরকার। অথচ রাজ্য কো-অপারেটিভগুলি থেকে টাকা তুলতে পারছে না। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দূরদুরান্ত পর্যন্ত ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিস নেই। সারা দেশে একই অবস্থা অন্য রাজ্যে। তারা কি খাবে? প্রশ্ন তুলেছেন মমতা।
এই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্র আর্থিক এমার্জেন্সি জারি করেছে গোটা দেশে। নিজেরা চূড়ান্তভাবে কনফিউসড। কোনও পরিকল্পনা নেই। কী করতে হবে নিজেরা জানে না। এর পিছনে কি লুকনো অ্যাজেন্ডা রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী।
কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার মমতা দিল্লি যাচ্ছেন। জানিয়েছেন, ২৩-২৪ তারিখ তিনি দিল্লিতে ফের পথে নেমে প্রতিবাদ করবেন। এরপরে ২৯ নভেম্বর লখনৌয়ে মিটিং করে বিহারেও মিটিং করবেন আগামী মাসের ১ অথবা ২ ডিসেম্বর। এরপরে পাঞ্জাবেও যাবেন বলে জানিয়ে রাখলেন তৃণমূল নেত্রী।
তবে কেন নিজের রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে প্রতিবাদের ঝড় তুলতে চললেন মমতা। সেই প্রশ্নে জানালেন, এটা রাজনৈতিক ইস্যু নয়। সামনে কোনও নির্বাচন নেই যার জন্য আমরা এমন বলব। আমরা বলছি কারণ সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। ছোট ও মাঝারি শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে।
মমতার কথায় আর সেজন্যই আমাদের প্রতিবাদ চলবে। আমজনতার স্বার্থে এটা চলবে। সংসদে আমরা প্রতিবাদ করব। বাকী রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলেছি। সকলে নিজের মতো করে প্রতিবাদ করবে। অর্থাৎ ফের একবার নোট বাতিল ইস্যুকে কেন্দ্র কের মোদী সরকারকে চাপে ফেলে কেন্দ্রীয় মঞ্চ তৈরির কৌশল চালাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
যদিও মমতা মুখে বারবারই গরিব মানুষের কষ্টের কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, কালো টাকার কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন, আমাদের অসুবিধা নেই। তবে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। তাই এর পিছনে কি গোপন অ্যাডেন্ডা রয়েছে তা জানতে হবে। এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বাকী মন্ত্রীরা অথবা অর্থন্ত্রী অরুণ জেটলি এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে মমতা বলেছেন, নোট বাতিল সমস্যার কোনও সমাধান হতে পারে না। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। তবে আমাদের সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী সকলকে হুমকি দিচ্ছেন। এটা অনেক বড় কেলেঙ্কারি।
সাংবাদিক বৈঠকের শেষ লগ্নে এসে মমতা ফের বলেন, আমরা ফের কেন্দ্রকে অনুরোধ করছি। যেখানে প্রয়োজন সাহায্য করব। তবে যদি ভেবে থাকেন সব ইস্যুতে সকলে সাহায্য করবে তাহলে ভুল। এটা বিপর্যয়। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করুন।