কামবর্ধক ওষুধের পরও যৌনতায় অনিহা 'লাজুক' বাঘের, রাতের ঘুম উড়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের!
কলকাতা, ১২ আগস্ট : পায়ে পড়ি বাঘ মামা...!
কিন্তু বাঘমামার পায়ে পড়েও যে কোনও লাভ হচ্ছে না। 'লাজুক' বাঘ মামাকে , যৌনক্ষুধায় মরিয়া বাঘিনীর সঙ্গে কিছুতেই যৌনমিলনে আবদ্ধ করতে পারছেন না আলিপুর চিড়িয়াখানার আধিকারিকরা। সাম, দাম, দণ্ড, বেদ সব প্রয়োগ করেও ঝুলিতে আসছে সেই অসাফল্যই।
বিবিসি-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশাল, আলিপুর চিড়িয়াখানায় যিনি সবার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন। এই বিশাল আসলে চিড়িয়াখানার সাদা বাঘ, যার বয়স ১০ বছর। পাশের ঘেরাটোপ থেকে মরিয়া বাঘিনী রূপা কতই না চেষ্টা চালাচ্ছে বিশালকে নিজের দিকে প্রলুব্ধ করার কিন্তু লাজুক বিশাল অনড়। ফিরেও তাকাচ্ছেও না রূপার দিকে।
যৌন কেলেঙ্কারির জেরে বিরহ বেলা কাটিয়ে ফের চিড়িয়াখানায় একত্রে দুই কামার্ত গাধা
বিশালকে কামশক্তিবর্ধক দেওয়া হয়েছে যাতে যৌন মিলনে ইচ্ছুক হয় বিশাল। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলেছেন, আসলে বিশাল গুহার মধ্যে জন্মেছে বলে ওর মধ্যে লাজুক ব্যাপারটা একটু বেশী মাত্রায় রয়েছে। আর তার জেরেই এই সমস্যা।
বিবিসি-কে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে পশু বিশেষজ্ঞ দয়ানারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গত ৬ মাস ধরে বিশালের যৌনমিলনের জন্য প্রাণপাত করছেন চিড়িয়াখানা কর্মীরা। কৃমির চিকিৎসা করানো হয়েছে, কামশক্তিবর্ধক দেওয়া হয়েছে, এছাড়াও ভিটামিন ডি, এ এবং ই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশালের মধ্যে কামের কোনও ইচ্ছাই দেখা যাচ্ছে না।
(ছবি) দিল্লি চিড়িয়াখানায় খাঁচায় পড়ে সাদা বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারাল কিশোর
আসলে চিড়িয়াখানার মধ্যে একমাত্র পুরুষবাঘ যে প্রজননের জন্য পর্যাপ্ত বয়সের। কিন্তু যদিও এক্ষেত্রে প্রজননের জন্য বিশালের বয়স একটু বেশিই।
দয়ানারায়ণবাবুর কথায় প্রজননের জন্য আদর্শ বয়স ৫-৬ বছর। ৭-৮ বছর পর্যন্তও স্বাভাবিক ভাবেই প্রজনন হয়ে য়ায়, কিন্তু তার বেশি হলে তখন একটু সমস্যা হয়।
বিশালের সামনে যখন প্রথন রূপাকে আনা হয় তখন তারা বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করছিল বলেই জানিয়েছেন দয়ানারায়ণবাবু। কিন্তু ৮ বছরের রূপা যেই যৌন মিলনের ইচ্ছা প্রদর্শন করল অমনি বিশাল অনড়, রূপাকে প্রতিরোধ করতে শুরু করল। হাত পা-ছুঁড়ে রূপাকে কাছে আসা থেকে বাধা দিতে শুরু করল। এখন তো রূপাকে দেখলেই তেড়ে আসে বিশাল।
চিড়িয়াখানার পশু বিশেষজ্ঞের মতে বিশাল সন্তানের জন্ম দিতে পারবে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এখনই হাল ছাড়াতে রাজি নয়।
চিড়িয়াখানার এক আধিকারিকের কথায়, রূপায় মন না গললেও রানিকে দেখে বিশাল নিশ্চই মজবে বলেই বিশ্বাস। রানি বাংলার বাঘিনী। দেখতেও সুন্দর। কিন্তু রানির ঘেরাটোপ বিশালের ঘেরাটোপ থেকে কিছুটা দূরে। রানিকে বিশালের কাছাকাছি ঘেরাটোপে আনা যায় কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্তের উপরই পরবর্তী পদক্ষেপ টিকে রয়েছে।