আর কোনওদিনও ফোন করব না সীতারামকে, কেন্দ্রের হাত শক্ত করছে বিরোধীরা : মমতা
‘অনাস্থা এনে আপনারা বাংলার মানুষকে অপমান করলেন। পাশাপাশি কেন্দ্রের হাত শক্ত করলেন।’ তাঁর প্রশ্ন, এখন অনাস্থা কেন? সবকিছুর একটা সময় আছে, সংসদীয় রীতিনীতি আছে
কলকাতা, ৯ ডিসেম্বর : অনাস্থা এনে কেন্দ্রের হাত শক্ত করছে রাজ্যের বাম-কংগ্রেস। শুক্রবার বিধানসভায় বিরোধীদের সরাসরি তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'অনাস্থা এনে আপনারা বাংলার মানুষকে অপমান করলেন। পাশাপাশি কেন্দ্রের হাত শক্ত করলেন।' তাঁর প্রশ্ন, এখন অনাস্থা কেন? সবকিছুর একটা সময় আছে, সংসদীয় রীতিনীতি আছে। তা না মেনেই এই অনাস্থা এনেছে বিরোধীরা।
শুধু অনাস্থা প্রসঙ্গেই নয়, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে ফোন করা প্রসঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী একহাত নেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, সৌজন্য দেখাতে ফোন করেছিলাম। ফোন করেছিলাম ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য। এখন আপনারা যখন সেই প্রসঙ্গ তুললেন, আর কখনও ফোন করব না।
সাড়ে পাঁচ বছরে এই প্রথম রাজ্যের তৃণমূল সরকার অনাস্থার মুখোমুখি হল। এদিন বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট মিলিতভাবে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। এই অনাস্থার মূল বিষয় ছিল তৃণমূল কংগ্রেস প্রলোভন দেখিয়ে ও ভয় দেখিয়ে বিরোধী বিধায়কদের ভাঙিয়ে নেওয়ার অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ বলেন, আপনারা বিধায়কদের ধরে রাখতে পারছেন না, সেটা আপনাদের ব্যর্থতা। বিরোধী দলের বিধায়করা স্বেচ্ছায় তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকার তলায় আসছেন। কোনও প্রলোভন বা ভয় প্রদর্শন করা হচ্ছে না। মমতা বলেন, সমস্ত রাজনৈতিক নেতা বা কর্মীর স্বাধীনতা রয়েছে কোন দলে তিনি থাকবেন, তা স্থির করা। আপনারা নিজের দলের বিধায়কদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে, তৃণমূল কংগ্রেসের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।
এছাড়াও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, সারদা, নারদ কেলেঙ্কারি, শিশু পাচার-সমস্ত প্রসঙ্গ নিয়েই আলোচনা হয়। কিন্তু আলোচনার জন্য সময় পর্যাপ্ত ছিল না বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর। এরই মধ্যে আয়োজন করা হয় ভোটাভুটিরও। ১৯০-৫০ ব্যবধানে অনাস্থা ভোটে জয়যুক্ত হয় তৃণমূল কংগ্রেস।
বিজেপি এই ভোটদান পর্বে বিরত থাকে। দু'পক্ষেরই অনেক বিধায়ক অনুপস্থিত ছিলেন। এদিন বিধানসভায় উপস্থিত থাকতে সমস্ত দলীয় বিধায়ককে হুইপ জারি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আবদুল মান্নান। তারপরও বেশ কয়েকজন বিধায়ক অনুপস্থিত ছিলেন।