বিধানসভায় মাস্টারস্ট্রোক মুখ্যমন্ত্রীর, শিশু বিক্রি রুখতে বিরোধীদের গুরুত্ব দিয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি
‘শিশু বিক্রির এই অসুখকে চিরতরে নির্মূল করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যেমন পুলিশের একার পক্ষে এই অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়, তেমনই একা শাসকের পক্ষেও সম্ভব নয়।’
কলকাতা, ৫ ডিসেম্বর : শিশু বিক্রি রুখতে কমিটি গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের গুরুত্ব দিয়ে সোমবার বিধানসভায় এই কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, শুধুমাত্র পুলিশের পক্ষে এত বড় র্যাকেটকে বিনাশ করা সম্ভব হবে না। শিশু বিক্রি রুখতে এগিয়ে আসতে হবে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে। সেইসঙ্গে কমিটি গঠন করে তিনি বার্তা দিলেন, এই কমিটি শিশু বিক্রি চক্রের জাল কাটতে সমন্বয়সাধন করবে।
এবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগেই আভাস ছিল শিশু পাচারকাণ্ডে উত্তাল হবে বিধানসভা। বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান নোটিশ জারি করেছিলেন। বিধানসভায় শিশু পাচার নিয়ে আলোচনার দাবি তুলেছিলেন তিনি। দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির। এদিন কিন্তু আগেভাগেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিবৃতি দেন মুখমন্ত্রী। বিরোধীদের মুখ খোলার আগেই তিনি বলতে শুরু করেন শিশু পাচার নিয়ে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজের একটা কালো দিক এই শিশু বিক্রি। রাজ্যজুড়ে এই র্যাকেট ভিতের ভিতের ছড়িয়ে পড়েছে। এই অসুখকে চিরতরে নির্মূল করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যেমন পুলিশের একার পক্ষে এই অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়, তেমনই একা শাসকের পক্ষেও সম্ভব নয় শিশু পাচারের শিকড় কেটে দেওয়া। তাই তিনি এক হয়ে কাজ করার জন্য বিরোধীদের গুরুত্ব দিয়েই কমিটি গঠন করে দেন।
এই কমিটিতে চেয়ারম্যান হন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কমিটিতে রয়েছেন মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, শিশু ও নারী কল্যাণ দফতরের সচিব। আর থাকছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান, বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, প্রতিমাসে অন্তত একবার করে বসবে এই কমিটির সভা। এই কমিটি পুরো বিষয়টি সমন্বয়সাধন করবে। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, এই প্রথম নতুন সরকার গঠনের পর বিরোধদের মর্যাদা দিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হল।