উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই মমতা সেরে রাখলেন আগামী বছরের নিমন্ত্রণ
কলকাতাকে ভারতীয় সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে ব্যাখ্যা করে মমতা আগামী বছরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলেন অমিতাভ-জয়া থেকে শুরু করে সঞ্জয়-কাজল-পরিনীতিদেরও।
কলকাতা, ১১ নভেম্বর : কলকাতায় চাঁদের হাট বসিয়ে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চলচ্চিত্র উৎসবের সূচনা হল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বলিউডের বিগ বি অমিতাভ বচ্চন সূচনা করলেন ২২ তম চলচ্চিত্র উৎসবের। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে 'সবার জন্য সিনেমা'র বার্তা দিলেন জয়া বচ্চন, শাহরুখ খান, কাজল, সঞ্জয় দত্ত-রাও।
বাংলা চলচ্চিত্র দিয়ে এই প্রথম সূচনা হবে সিনেমা উৎসবের। সেই সুরেই বিশ্ববাংলার জয়গান মুখ্যমন্ত্রী মমতার কথায়। কলকাতাকে ভারতীয় সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে ব্যাখ্যা করে আগামী বছরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলেন অমিতাভ-জয়া থেকে শুরু করে সঞ্জয়-কাজল-পরিনীতিদেরও। আর শাহরুখ তো থাকবেনই, তিনি যে বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর।
সত্যজিৎ-উত্তম কুমারের বাংলায় আজ পর্যন্ত বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র দিয়ে উদযাপিত হয়নি উৎসব। সেই আঙ্গিকে এবারের উৎসবের গুরুত্ব অপরিসীম। 'বেঁচে থাকার রাত' নামে এক সিনেমা দিয়েই এই উৎসবের সূচনা হবে। এ জন্য বাইশ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে সেই দিনটি দেখতে চলেছে শহরবাসী।
এবার চলচ্চিত্র উৎসবের থিম 'সিনেমার সবাই, সবার সিনেমা'৷ কেনজি মিজোগুচি, গ্রেগরি পেক আর কানন দেবী, আক্ষরিক অর্থেই বাইশতম চলচ্চিত্র উৎসব এক কথায় বৈচিত্রের সমাহার৷ বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে চিনকে। চিনের সাতটি সিনেমা দেখানো হবে। ১১ থেকে ১৮ নভেম্বর এই উৎসবে ৬৫টি দেশের মোট ১৫৫টি সিনেমা দেখানো হবে। নন্দন সেজে উঠেছে নতুন আঙ্গিকে। পাড়ায় পাড়ায় সিনেমা পৌঁছে দেওয়াই এই উৎসবের লক্ষ্য। টানা সাতদিন একসঙ্গে সিনেমা দেখার শপথ নিয়েছে তিলোত্তমা৷ কলকাতার ১০৫টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সম্প্রচার হবে সিনেমাগুলি।
এবার চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নায়িকা প্রধান সিনেমাগুলিতে। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মহিলা পরিচালিত সিনেমাকে। সেই সূত্র ধরেই অমিতাভ বচ্চন নারী চরিত্র, নারী অধিকার নিয়ে তাঁর জ্বালাময়ী বক্তব্য রেখেছেন। প্রায় এক ঘণ্টার বক্তব্যে সবাই ছিলেন অমিতাভের ভাষ্যে নিমগ্ন।
শাহরুখ খানও তাঁর ছোট্ট বক্তব্যে বুঝিয়ে দেন, তিনি বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার। এবার বাংলায় বলার জন্য একেবারে তৈরি হয়ে এসেছিলেন শাহরুখ। শুরু করলেন বাংলা দিয়ে, আর শেষও করলেন বাংলায়। বাংলাতেই বললেন, 'কলকাতা আমার প্রাণের শহর, আর চলচ্চিত্র উৎসব আমার প্রাণের উৎসব।' বক্তব্য রাখেন সঞ্জয় দত্ত, কাজল, পরিনীতি চোপড়াও।
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মঞ্চ যখন রূপোলি আলোয় আলোকিত, তখন টলিউড অপেক্ষায় দর্শকাসনে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যরাও ছিলেন দর্শকাসনে। চলচ্চিত্র উৎসবে অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি ও পট।