কু-কথার যুদ্ধ চলছেই বিজেপি-তৃণমূলের, এবার মুখ্যমন্ত্রীকে মিথ্যেবাদী, ঘুষখোর বললেন লকেট
এক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলেন মিথ্যেবাদী। এবার একটু ঘুরিয়ে বললেন ঘুষখোর। প্রতিদিন নিয়ম করে বাকযুদ্ধ চলছেই। বিরাম নেই কু-কথার।
কলকাতা, ৩০ ডিসেম্বর : প্রতিদিনই নিয়ম করে তোপ দাগছেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁর নিশানায় একদা তাঁর নেত্রী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলেন মিথ্যেবাদী। এবার একটু ঘুরিয়ে বললেন ঘুষখোর। প্রতিদিন নিয়ম করে বাকযুদ্ধ চলছেই। বিরাম নেই কু-কথার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে লকেট চট্টোপাধ্যয় আগের দিন বলেছিলেন, ধূলাগড় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মিথ্য কথা বলছেন। সত্যকে গোপন করে উনি যে মিথ্যে বলছেন, তার প্রমাণ হল এলাকায় ১৪৪ জারি করা রয়েছে। আর তা জারি করেছেন এ রাজ্যের পুলিশই। মুখ্যমন্ত্রীই হলেন স্বয়ং পুলিশমন্ত্রী। তিনি জানবেন না ১৪৪ ধারা জারি হবে, তা তো হতে পারে না। ফলে মুখ্যমন্ত্রী যে বলেছেন, ধুলাগড়ে কিছুই হয়নি, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সেই ঘটনার পর আবার লকেট-তোপে মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে লকেট বলেন, গুরুর থেকেই শিক্ষা নেয় শিষ্যরা। তাই গুরুও ঘুষ নেন, তাঁর শিষ্যরাও ঘুষ নিচ্ছেন। আজ ট্রাকচালকরা বিপদে পড়েছেন বলেই তো তারা প্রকাশ্যে বলেছেন, পুলিশ তাঁদের কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছেন। আসলে এটাই এখন রীতি হয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইন্ধন রয়েছে পুলিশের এই কাজে। তাঁর ইন্ধন না থাকলে কারও পক্ষে ঘুষ নেওয়া সম্ভব হত না।
লকেটের অভিযোগ, তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যে এমনই এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে সর্বক্ষেত্রেই ঘুষের বাড়বাড়ন্ত। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে, বেড পেতে গেলে ঘুষ চাওয়া হচ্ছে। চাকরির ক্ষেত্রে ঘুষ চলছে। কিন্তু কোনও কিছুতেই ব্যবস্থা নেননি মুখ্যমন্ত্রী। এসব কাজে তাঁর ইন্ধন যে রয়েছে, সে কথা বলতেই হয়।
উল্লেখ্য, গতকালই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় নৈহাটির এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ট্রাকচালকরা অভিযোগ করছে, পুলিশ ঘুষ নিচ্ছে। সৌগতবাবুর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই বিজেপি নেত্রী তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
সৌগতবাবু রাষ্ট্রপতিকে ঠুঁটো জগন্নাথ বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন। লকেট এ প্রসঙ্গে বলেন, কোন পদে থাকলে কাকে কেমন সম্মান করতে হয়, তা জানেন না তৃণমূলের কেউ। যেমন মুখ্যমন্ত্রী, তেমনই তাঁর অনুগামীরা। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিদিনই প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে চলেছেন। আর তাঁর অনুগামীরা রাষ্ট্রপতিকে। এতে আর অবাক হওয়ার আছে কী!
সৌগতবাবু ওই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে মোদীর কেটলি বলে কটাক্ষ করেন। লকেট তার জবাবে বলেন, তৃণমূলের ভাঁড়ার শূন্য হয়ে গিয়েছে। তাই এবার ওঁদের স্বরূপ বেরিয়ে পড়ছে। আসলে একটা দল চিটফান্ডের উপরর দাঁড়িয়ে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে সেই 'প্রাসাদ' ভেঙে পড়তে চলেছে। তাই দিশাহীন হয়ে পড়েছেন রাজ্যের শাসকদলের নেতী-নেত্রীরা।