সিটি সেন্টার থেকে উদ্ধার ‘অপহৃতা’, একাই গাড়ি করে রাতভর ঘোরে বলে দাবি ছাত্রীর
সিটি সেন্টার-টু থেকে উদ্ধার করা হল সল্টলেকের অপহৃতা ছাত্রীকে। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে একাদশ শ্রেণির এই ছাত্রীকে উদ্ধার করে বিধাননগর থানার পুলিশ।
কলকাতা, ১ এপ্রিল : সিটি সেন্টার-টু থেকে উদ্ধার করা হল সল্টলেকের অপহৃতা ছাত্রীকে। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে একাদশ শ্রেণির এই ছাত্রীকে উদ্ধার করে বিধাননগর থানার পুলিশ। ওই ছাত্রী শনিবার সিটি সেন্টারে ঘোরাঘুরি করছিল একাকী। তখনই পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। 'অপহৃতা' ওই ছাত্রীকে জেরা করে পুলিস জানতে পেরেছে, গতকাল রাতভর সে একাই গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছে। পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কাতেই সে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ এখন জানার চেষ্টা চালাচ্ছে, ওই কিশোরীর সঙ্গে অন্য কেউ ছিল কি না। একাকী রাতভর কলকাতায় ও কলকাতা সংলগ্ন জেলায় গাড়ি নিয়ে ঘোরার তত্ত্ব পুলিশ বিশ্বাস করছে না। প্রথম থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে ধন্দ ছিল। এখন ছাত্রী উদ্ধারের পর অনেকটাই স্পষ্ট তাকে অপহরণ করা হয়নি। স্বেচ্ছায় সে পালিয়ে গিয়েছিল। এখন তার পালিয়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেইসঙ্গে এই কাজে তাকে কেউ সঙ্গ দিয়েছিল কি না তাও জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে ছাত্রী অন্তর্ধান রহস্যের কিনারায় নামে পুলিশ। শনিবার সকালে ছাত্রীটি মোবাইল টাওয়ার লোকেশন মিলেছে হুগলিতে। 'অপহৃতা' ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য হুগলি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযান চালায় দক্ষিণ থানার পুলিশ। সেই টাওয়ার লোকেশন ধরেই সিটি সেন্টারে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। ছাত্রীটির বাবাকে নিয়েই এই অভিযান চালায় পুলিশ।
শুক্রবার সল্টলেকের এফসি ব্লক থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায় ব্যবসায়ী কিশোরী কন্যা। এরপর তাকে 'অপহরণ' করা হয়েছে বলে গল্প ফাঁদে সে। রাত দশটা নাগাদ বাবার মোবাইলে ফোন করে 'অপহৃতা' ছাত্রী জানায়, তাকে তিন-চারজন যুবক জোর করে তুলে নিয়ে গিয়েছে। তারপর থেকেই আর কোনও যোগাযোগ করা যায়নি ওই কিশোরীর সঙ্গে। বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ ছাত্রীটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে অন্তর্ধান রহস্য সমাধানে।
এই রহস্য উন্মোচনে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের সূত্রকেই হাতিয়ার করে এগোয় পুলিশ। সেইমতো গত রাতেই ছাত্রীটির মোবাইল টাওয়ার লোকশন ট্র্যাক করা হয়। প্রথমে ডানলপ, তারপর শ্যামবাজারে, গিরিশ পার্কে মেলে ছাত্রীটির মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন। এদিন ভোরের দিকে ফের তার টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যায় হুগলিতে। হুগলির কোন্নগরে ছাত্রীটি রয়েছে, তাও চিহ্নিত করে ফেলে পুলিশ।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ বাড়ির সামনেই একটি দোকানে খাতা কিনতে গিয়েছিল ওই ছাত্রী। দোকানদার জানিয়েছেন, ওই ছাত্রী তার বোনকে নিয়ে খাতা কিনতে আসে। তারপর ফিরেও যায়। খানিকক্ষণ বাদে ওই ছাত্রীর বোন এসে তাঁর কাছে খোঁজ নেয় ফের দিদি এসেছিল কি না। এরপর বোন বাড়ি ফিরে গেলেও দিদি বাড়ি ফেরেনি। ছাত্রীটি দীর্ঘক্ষণ ফিরে না আসায় সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কালবিলম্ব না করে বিধাননগর দক্ষিণ থানার দ্বারস্থ হন ছাত্রীর বাবা।