অধীরের হাত ধরে তৃণমূল ছেড়ে ‘ঘর’-এ ফিরলেন হুমায়ুন কবীর, সঙ্গে দুই পঞ্চায়েত প্রধানও
হাসিমুখে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত থেকে জাতীয় কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে আবেগতাড়িত হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুনের সঙ্গে কংগ্রেসে যোগ দিলেন দুই দলত্যাগী গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যও।
কলকাতা, ২৪ অক্টোবর : ফের অধীর চৌধুরীর হাত ধরে ঘরে ফিরলেন হুমায়ুন কবীর। অধীর অনুগামী বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদের এই নেতাকে তৃণমূলে নাম লিখিয়ে কংগ্রেসে ভাঙনের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই তিনিই আজ তৃণমূলের মোহ কাটিয়ে ঘরে ফেরার আনন্দে মশগুল।
হাসিমুখে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত থেকে জাতীয় কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে আবেগতাড়িত হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুনের সঙ্গে কংগ্রেসে যোগ দিলেন দুই দলত্যাগী গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যও।
এ ঘটনা বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষিতে মুর্শিদাবাদে উলট পুরানেরই নামান্তর। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হুমায়ুনের এই কংগ্রেসের ফেরাকে উল্টো রথযাত্রার সঙ্গেও তুলনা করছেন। একে একে সব হারিয়ে নিজের ঘরেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন অধীর চৌধুরী। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে সাত-সাতটি পুরসভা হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের দল ভাঙানোর খেলায় এবার একটা একটা করে পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হতে বসেছে। ঠিক সেই সময় পুরনো 'বন্ধু'কে পাশে পেয়ে কিছুটা অক্সিজেন পেলেন অধীর। আবার নিজের গড়ে নিজেকে প্রমাণের জন্য শূন্য থেকে লড়াই শুরু করতে সেই পুরনো বন্ধুই হচ্ছেন তাঁর ঘুঁটি।
কংগ্রেসের হাত ছেড়ে ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর চলে গিয়েছিলেন তৃণমূলে। তার ঠিক ৩ বছর ১১ মাস পর তৃণমূলের মোহ কাটিয়ে কংগ্রেসে ফিরলেন হুমায়ুন কবীর। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই তাঁকে মন্ত্রী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নির্বাচনে হেরে মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয় তাঁকে। তাঁকে বোড়ে করেই মুর্শিদাবাদ দখল করতে তৎপর হয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু দোর্দণ্ডপ্রতাপ অধীর তখন মাথা তুলতে দেননি তৃণমূলকে। তারপর হুমায়ুন ক্রমশই ব্রাত্য হয়ে গিয়েছেন মমতার টিমে। কখনও ইন্দ্রনীলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, কখনও দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা ও নানা ইস্যুতে দলের অন্দরে সংঘাতে জড়িয়ে পড়া তাঁকে তৃণমূলে এক ঘরে করে দিয়েছিল। শুভেন্দু-অভিষেকের নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদে অধীর-রাজ খতম-যজ্ঞে তাঁকে অপাংক্তেয় করে রাখা হয়েছিল।
তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে শেষ পর্যন্ত ঘরে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সোমবার বিধান ভবনে অধীর চৌধুরীর হাত ধরে তিনি ফিরলেন তাঁর পুরনো দলেই। আবার শূন্য থেকে লড়াই শুরু তাঁর নেতার হাত ধরেই।