রূপান্তরিত রমণীর প্রথম আইনি বিয়ে রাজ্যে, সমকামিতায় সিলমোহর?
সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে সরিয়ে জয় হল ভালোবাসার। দু’টি হৃদয় বাঁধা পড়ল প্রেমের বন্ধনে। সামাজিক স্বীকৃতি পেল শ্রী-সঞ্জয়ের বিয়ে। পেল আইনি স্বীকৃতিও।
কলকাতা, ২০ ফেব্রুয়ারি : সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে সরিয়ে জয় হল ভালোবাসার। দু'টি হৃদয় বাঁধা পড়ল প্রেমের বন্ধনে। সামাজিক স্বীকৃতি পেল শ্রী-সঞ্জয়ের বিয়ে। পেল আইনি স্বীকৃতিও। রাজ্যে প্রথম রূপান্তরিত নারী সংসার পাতলেন। পেলেন নিজের ঘর। প্রকারান্তরে স্বীকৃতি পেল সমকামিতাও। সৌজন্যে সঞ্জয় ও শ্রীয়ের ভালোবাসা।[বৃহন্নলা মেঘার বিয়ে বাসুদেবের সঙ্গে]
১৬ বছরের প্রেমের পর একেবারে বাঙালি বিয়ের নিয়ম মেলে 'যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ম মম' মন্ত্রে বাঁধা পড়ল দু'টি হৃদয়। সমজের সকল বাধা-বিপত্তির গন্ডি পেরিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পূর্ণতা পেল সঞ্জয়-শ্রীয়ের ভালোবাসা।[মনমোহিনী এই মহিলারা, যাঁরা জন্মেছিলেন পুরুষ হয়ে!]
একেবারে স্বতন্ত্র এই বিয়ে। শ্রীয়ের বিয়ে। শ্রী ঘটক। পাত্র সঞ্জয় মুহুরি। দু'টি নিতান্তই ছাপোষা পরিবার। কিন্তু শ্রীয়ের জীবন কাহিনি যে নেহাতই ছাপোষা নয়। রূপান্তরিত মহিলা শ্রী। তাতে কী প্রেম কি বাধা মানে। ঝড়-ঝাপটা আসে, আবার তা সরিয়ে জয় হয় প্রেমেরই। তেমনই এক প্রেমের পূর্ণতার ঐতিহাসিক সাক্ষী হয়ে থাকল বাংলা।[রূপান্তরকামীদের জন্য এবার আসছে 'জি-ট্যাক্সি'!]
শুধু বাংলাই বা কেন, নজির সৃষ্টি হল তো দেশেও। শ্রী-ই প্রম রূপান্তিরত মহিলা এ দেশে, আইনি বিয়ের স্বীকৃতি নিয়ে ঘর বাঁধলেন। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়েছিল শ্রী-সঞ্জয়ের। কিন্তু তাঁদের বিয়ে সেদিন আইনি বিয়ের স্বীকৃতি পায়নি। স্বীকৃতি মিলল পাক্কা এক বছর পর। প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে সরকারি সিলমোহর লাগল শ্রী-সঞ্জয়ের বিয়েতে।[দেশের প্রথম রূপান্তরকামী মহিলা সাব-ইনস্পেক্টর]
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাগুইআটির হোটেলে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হল। দুই পরিবার বিয়েটা মেনে নিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু আইনি স্বীকৃতি পেতে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয় দম্পতিকে। হবে নাইবা কেন? শ্রী-র জন্ম তো পুত্রসন্তান হিসেবে। কিন্তু মনটা ছিল মহিলার। শ্রীয়ের শ্রীমতি হয়ে ওঠার পিছনে অনেক কিছু মুছে ফেলতে হয়েছে, গড়ে হয়েছে নারীত্ব। সে কী কম লড়াইয়ের! মধুরেন সমাপয়েৎ তো কষ্টসাধ্য হবেই।[ভারত পেল প্রথম 'রূপান্তরিত' কলেজ অধ্যক্ষা, মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়]