শুভ্রা-যোগে রোজভ্যালিকাণ্ডের তদন্ত থেকে অপসারিত ইডি অফিসার, বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ
রোজভ্যালিকাণ্ডের তদন্ত থেকে সরানো হচ্ছে ইডি-র আধিকারিক মনোজ কুমারকে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা, ৩১ জানুয়ারি : রোজভ্যালিকাণ্ডের তদন্ত থেকে সরানো হচ্ছে ইডি-র আধিকারিক মনোজ কুমারকে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি রোজভ্যালি কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর যোগসূত্র পায় পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মনোজ কুমারকে তদন্ত থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লির ইডি অফিস। তদন্তে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে।
সম্প্রতি রোজভ্যালি কাণ্ডে গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রীর সঙ্গে নাম জড়ায় ইডি তদন্তকারী অফিসার মনোজকুমারের। সিসিটিভি ফুটেজে একাধিক স্থানে দু'জনকে দেখা যায়। তারপর মেসেজ আদানপ্রদান থেকে শুরু করে ফোনে দীর্ঘ কথাবার্তার তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। সোমবার এই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রচার হতেই ইডি ও সিবিআই-র তরফে বিশদ জানতে চাওয়া হয়। তারপরই মঙ্গলবার ইডি-র ওই অফিসারকে তদন্ত থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ১৫ ডিসেম্বর ম্যাঙ্গো লেনের একটি অফিসে হানা দিয়ে দেড় কোটি টাকার পুরনো নোট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে। কিন্তু তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই টাকার উৎস সম্বন্ধে কিছু জানা যায়নি। তারা কতকগুলো বেনামি সংস্থায় ওই টাকা পাঠাত বলে জানতে পারে পুলিশ। সেইমতো ওই বেনামি সংস্থায় তল্লাশি অভিযানে নামে পুলিশ।
বেনামি সংস্থায় হানা দিয়ে কম্পিউটার হার্ডডিস্কে থেকে দু'টি ফোল্ডারের কথা জানতে পারে পুলিশ। একটি রোজভ্যালির নামে, অন্যটি ম্যাডাম রোজভ্যালির নামে। ম্যাডাম রোজভ্যালির হদিশ করতে গিয়েই উঠে আসে গৌতম-পত্নী শুভ্রা কু্ণ্ডু ও ইডি তদন্তকারী অফিসারের ঘনিষ্ঠতা। ওই ইডি-কর্তার মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা পাচার হয়ে থাকতে পারে বলে এমনও তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে।
রোজভ্যালিকাণ্ডে প্রথম তদন্ত শুরু করেছিল ইডিই। সেই তদন্তে এই মনোজকুমারের একটা বিশাল ভূমিকা ছিল। তিনিই একাধকি ব্যক্তিকে সমন দিতেন, জেরা করতেন। তিনিই সন্দেহর তালিকায় চলে যাওয়ায় নড়ে বসেন ইডি-র শীর্ষ কর্তারা। মঙ্গলবার তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে মনোজ কুমারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে অপসারিত করা হয়েছে রোজভ্যালি তদন্ত থেকে।
ইডি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। মনোজকুমারকে ফাঁসানো হচ্ছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেননা, তিনি রোজভ্যালি কাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর রোজভ্যালিকাণ্ডে নাম উঠে এসেছে রাজ্যের শাসকদেলরই। তাই রাজ্যের শাসকদল, তথা রাজ পুলিশ প্রশাসনের তরফে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে কি না তাও খতিয়ে দেখেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইডি। সিবিআইও এই ঘটনার দিকে নজর রেখেছে।