‘সেচমন্ত্রী শুধু ছবি তুলে বেড়াচ্ছেন’, বন্যা ইস্যুতে দিলীপ ঘোষের নিশানায় মুখ্যমন্ত্রীও
উত্তরবঙ্গ ভাসছে। বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নিয়েছে বাংলায়। তবু কোনও মন্ত্রীকেই এতদিন দেখা যায়নি বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে। সমালোচনায় মুখর দিলীপ ঘোষ।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বুধবার কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, 'বন্যা মোকাবিলায় সবার আগে যাঁর ঝাঁপিয়ে পড়া দরকার, সেই সেচমন্ত্রী শুধু ছবি তুলে বেড়াচ্ছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী শুধু উদ্বেগ প্রকাশ করেই ক্ষান্ত, তাঁর মন্ত্রিসভার কোনও সদস্যই বন্যা পরিদর্শনে যাননি।'
তিনি এদিন বলেন, উত্তরবঙ্গ ভাসছে। বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নিয়েছে বাংলায়। তবু কোনও মন্ত্রীকেই এতদিন দেখা যায়নি বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে। মা-মাটি-মানুষের স্লোগান দিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, এর বেলা কেন পীড়িতদের পাশে দাঁড়াননি মুখ্যমন্ত্রী? কেন সবাই এখনও ত্রাণ পেলেন না? প্রশ্ন তোলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়ে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। আসলে তাঁর সমস্ত উদ্বেগই ছিল সস্তার প্রচারের জন্য। তিনি যদি সত্যিই উদ্বিগ্ন হতেন, তবে বাংলায় ফিরেই ছুটে যেতেন অসহায় মানুষগুলোর পাশে। কিন্তু তিনি তা করেননি। এখন পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের ভয়াল বন্যা পরিদর্শনও করেননি। ব্যবস্থাও নেননি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আটকে পড়া মানুষগুলোকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও।
এদিন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়েরও কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। দিলীপবাবু বলেন, একজন সেচমন্ত্রী হিসেবে তাঁর অনেক আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল। সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছচ্ছে কি না দেখভাল করা উচিত ছিল। কিন্তু তিনি তা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। চতুর্দিকে ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ। কেউই ত্রাণ পাননি। দুর্ভোগে কাটছে বন্যাপীড়িত মানুষগুলোর।
সেচমন্ত্রী শুধু ছবি তুলতেই এখন বন্যা কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন দিলীপবাবু। বন্যা নিয়ন্ত্রণে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে তাঁর দাবি। রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বর্ষার জন্য যে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, তার কিঞ্চিৎভাগও নেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই কারণেই রাজ্যের মানুষকে কঠিন পরস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে।
এদিন পাহাড় নিয়েও তৃণমূল সরকারকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তাঁর কথায়, পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর কোনও সদিচ্ছা নেই। রাজ্য সরকারের উচিত ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকে পাহাড় সমস্যার সমাধান করা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কোনও উচ্চবাচ্যও করছেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বার্তার পরও নির্বিকার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এদিন রাজ্যে কসাইখানা বন্ধের দাবিতেও সরব হন তিনি।