মহিলা এএসআই-এর সঙ্গেও প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল দিবাকরের, অভিযোগ বেলেঘাটার আক্রান্ত তরুণীর
বেলেঘাটায় তরুণীকে গুলি-কাণ্ডে এবার নাম জড়াল এক মহিলা এএসআই-এর। আক্রান্ত তরুণীর দাবি, ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গেও প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত প্রাক্তন সেনাকর্মী দিবাকরের।
কলকাতা, ২৭ অক্টোবর : বেলেঘাটায় তরুণীকে গুলি-কাণ্ডে এবার নাম জড়াল এক মহিলা এএসআই-এর। আক্রান্ত তরুণীর দাবি, ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গেও প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত প্রাক্তন সেনাকর্মী দিবাকরের। ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিকও তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল দিবাকরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে। তরুণীর এই বিস্ফোরক দাবির পর তদন্ত স্বভাবতই চাঞ্চল্যকর মোড় নিতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবারই লালবাজারে তলব করা হয়েছে ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিককে।
গত সেপ্টেম্বর রায়গঞ্জে দিবাকরের ডেরা থেকে কলকাতায় পালিয়ে এসেছিলেন ওই তরুণী। তারপরই দিবাকরের বিরুদ্ধে বেলেঘাটা থানায় অভিযোগ করেন তিনি। তাঁকে দু'মাস যাবৎ বাড়িতে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিত্য সহবাস করেছে দিবাকর। সেখান থেকে কোনওরকমে পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও তারপর বাড়িতে ধাওয়া করে গুলি করে খুন করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে দিবাকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পরও পুলিশের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
বেলেঘাটা থানার বিরুদ্ধে এই নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ আনেন আক্রান্ত তরুণী স্বয়ং। তাঁর ব্যাখ্যায় তরুণী বলেন, থানার বহু পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীর সঙ্গে যোগসাজোশ ছিল দিবাকরের। এক মহিলা অফিসারের সঙ্গে দিবাকরের প্রণয়-সম্পর্ক ছিল বলেও তাঁর দাবি। ওই আধিকারিকই তাঁকে চাপ দিচ্ছিল অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য। তিনি দিবাকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করেননি বলেই গুলি করে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে।
পুলিশও ঘটনার তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, অনেক পুলিশকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল দিবাকরের। তাই তদন্তর অগ্রগতি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পেয়ে যেত দিবাকর। গা ঢাকা দিয়ে দিত পুলিশি অভিযানের আগেই। সেই কারণেই তাকে গ্রেফতার করাও সম্ভব হয়নি এতদিন। কয়েক মাস আগে ওই মহিলা এসআইকে অন্য থানায় বদলি করে দেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।
এদিকে আক্রান্ত তরুণীর মোবাইল পরীক্ষা করে দেখছে পুলিশ। তরুণীর মোবাইলে এমন কিছু রয়েছে, যা এই তদন্তে প্রামাণ্য হতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। আক্রান্ত তরুণীর নামে একটি ফেসবুক প্রোফাইল ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। ওই প্রোফাইল থেকে করা পোস্টে বেলেঘাটা থানার ওসির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। তরুণীর দাবি, তাঁর নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ওই কাজ দিবাকরেরই।