প্রতিবাদে লক-আপেই কাটল রাত, পুলিশও কঠোর বিজেপির ‘হিংসাত্মক’ লালবাজার অভিযানে
সিপিএমের নবান্ন অভিযানে ধৃত বামনেতারা জামিন নিলেও, লালবাজার অভিযানে ধৃত বিজেপি নেতৃত্ব জামিন নিলেন না। ফলে পুলিশ লকআপে রাত কাটিয়ে আদালতের পথে কৈলাশ-দিলীপরা।
পুলিশ লক-আপেই রাত কাটাল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার আদালত থেকেই তাঁরা জামিন নিতে চান। ফলে শুক্রবার বিজেপি নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ফের উত্তপ্ত হবে রাজ্য। বিজেপি-র লালবাজার অভিযানকে কেন্দ্র করে নানা হিংসাত্মক ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশও। মোট ১৪১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে সাতজনকে মুক্তি দিলেও বাকি ১৩৪ জন পুলিশ হাজতেই রয়েছেন। শুক্রবার তাদের আদালতে পেশ করা হবে।
বিজেপি চাইছে, লালবাজার অভিযানের রেশ ধরে রাখতে। সেই কারণেই কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা থেকে শুরু করে লকেট চট্টোপাধ্যায়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়রা কেউই জামিন নেননি। এদিন আদালত চত্বরে এতজন বিজেপি নেতা-কর্মীকে তোলা নিয়েও ফের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। আর বিজেপি সেটাই চাইছে। এদিন ফের বিজেপি রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ-অবস্থান জারি রাখার পথেই হাঁটছে। জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করবে বিজেপি।
পুলিশ নেতৃত্বস্থানীয়দের জামিন নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেউই জামিন নিতে চাননি। তাই কর্মীদের সঙ্গে নেতাদেরও আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশের অভিযোগ, বিজেপি শান্তিপূর্ণ মিছিল করার আবেদন জানিয়েও শহরজুড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পুলিশের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার জানান, আন্দোলনকারীরা ইট, ঢিল, পেট্রোল বোমা নিয়ে পুলিশের উপর আক্রমণ করেছে। ব্যারিকেড ভেঙে আক্রমণ শানানো হয়েছে।
শুধু তাই নয়, পুলিশের গাড়িসহ সরকারি ও বেসরকারি গাড়িতে অগ্নিসংযোগও করা হয়েছে। মোট ২১ জন পুলিশ কর্মী গুরুতর জখম হন। তাই বিষয়টিকে হাল্কাভাবে নিচ্ছে না পুলিশ। পুলিশ এদিন অনেক সংযত ছিল। বহুক্ষণ ধৈর্য ধরার পর বিজেপি নেতা-কর্মীদের প্রতিহত করতে বাধ্য হয় তারা। এরপর পুলিশের পাল্টা আক্রমণে বিজেপি-রও ৬০-৭০ জন কর্মী গুরুতর জখম হন। অনেককে হাসপাতালে পাঠাতে হয়।
সেই ঘটনারই প্রতিবাদে ও নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এদিন আন্দোলনে নামছে বিজেপি। এদিনও কলকাতা আংশিক রুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা। ধৃতরা রয়েছেন বড়বাজার, হেয়ার স্ট্রিট, বউবাজার, জোড়াসাঁকো, উত্তর বন্দর থানায়। থানাগুলিতে ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানিয়েছেন বিকেল তিনটে থেকে শুরু হবে এই কর্মসূচি। তার আগে নেতা-কর্মীদের আদালতে পেশ করা হবে।