বেপরোয়া অটোচালকদের দৌরাত্ম্য, এখন মন্ত্রীকেও নিয়ম শেখাচ্ছেন চালকরা!
কলকাতা, ১৭ সেপ্টেম্বর : লাগামহীন অটো-দৌরাত্ম্যে নাজেহাল শহরবাসী। এবার বাদ গেলেন না খোদ মন্ত্রীও। অটোচালকরা এখন এতটাই বেপরোয়া যে মন্ত্রীকেও রেয়াত করছেন না। শুক্রবার রাতে খাদ্য ভবনের সামনে দেখা গেল সেই দৃশ্যই। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়লেন এক অটোচালক। শেষমেশ গাড়ি থেকে নেমে পুলিশ ডেকে ব্যবস্থা নিতে হল মন্ত্রীকে। [বেপরোয়া অটোর ধাক্কা চলন্ত বাসে, গৌরীবাড়িতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু কলেজ ছাত্রীর]
বেপরোয়া, লাগামহীন অটোচালকদের স্পর্ধার সীমা ছাড়াচ্ছে ক্রমশ। খাদ্য ভবনের গেটের বাইরে সার সার অটো দাঁড়িয়ে থাকে প্রতিদিন। সকাল থেকে রাত-বদলায় না সেই দৃশ্য। প্রতিদিন নিয়ম করে নিয়ম ভাঙার খেলায় মেতে ওঠে অটোচালকরা। নিয়ম নেই, তবু এখান থেকেই যাত্রী তোলা, খাদ্য ভবনের মেইন গেট আটকে রাখা, চলতেই থাকে।
প্রতিবাদ করেছিলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তখনই বাধে গোল। মন্ত্রীর দিকেই আঙুল তোলেন এক অটোচালক। মন্ত্রীর সঙ্গে তর্ক, মন্ত্রীকে নিয়ম শেখানো- বাদ গেল না কিছুই।
এদিন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গাড়ি খাদ্যভবনে ঢোকার মুখে বাধা পায় এমনই কিছু অটোর সামনে। গাড়ি থেকে নেমে আসেন মন্ত্রী। কেন অটো এখানে রাখা হয়েছে? মন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তরে, পাল্টা তর্ক জুড়ে দেন অটোচালকরা। তাঁদের 'সাহসী' জবাব আসে, 'এখানেই রাখেন তাঁরা, এটাই নিয়ম!' তাজ্জব বনে যান মন্ত্রী। চলে তুমুল তর্কাতর্কি। শেষপর্যন্ত মন্ত্রীকে ডাকতে হয় পুলিশ।
এদিন যা ঘটল, তারপর প্রশ্ন উঠতে বাধ্য, খোদ মন্ত্রীকেই যদি রেয়াত না করেন অটোচালকরা, সাধারণ মানুষের দশা কী হবে? কেননা, অটোর এই দৌরাত্ম্য নতুন নয়। এদিনই এক অটোচালকের বেপরোয়া ড্রাইভিং কেড়ে নিয়েছে ছাত্রীর প্রাণ। ট্রাফিক সিগন্যাল ব্রেক করে বাসে ধাক্কা মারে অটোটি। তাই গৌরিবাড়ির এই ঘটনাকে দুর্ঘটনা না বলে, পুলিশ-প্রশাসনের ব্যাখ্যায় - এটি অনিচ্ছাকৃত খুন।
এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী তোলা, একই রেজিস্ট্রেশনে বহু অটো চালানো, রাস্তা দখল করে রাখা, ট্রাফিক আইন ভাঙা, ভাড়া নিয়ে বচসা, খুচরো নিয়ে বিবাদ, মারধর, কটূক্তি- এমন ভুরিভুরি অভিযোগ তো ছিলই অটোচালকদের বিরুদ্ধে। এবার সংযোজন হল মন্ত্রীর সঙ্গেও বচসা। সব মিলিয়ে অটো এখন শহরে আতঙ্কের আর এক নাম।