'আমাকে হুমকি দিয়েছেন রাজ্যপাল, আমি লজ্জিত-অপমানিত', আর কী বললেন মমতা
বসিরহাটে অশান্তির জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তিনি ফোন করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
রাজ্যপালের কথায় চূড়ান্ত অসম্মানিত হয়ে পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে মেজাজ হারিয়ে তিনি বলেন, 'রাজ্যপালের দয়ায় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আসিনি। আমি মানুষের দ্বারা নির্বাচিত। রাজ্যপাল আমাকে ফোন করে হুমকি দিতে পারেন না। এমন অসম্মানিত জীবনে হইনি। রাজ্যপাল যেন বিজেপি-র ব্লক সভাপতির মতো কথা বলছেন। দয়া করে আমার সঙ্গে এভাবে কথা বলবেন না। আমি এসব বরদাস্ত করব না।'
বসিরহাটে অশান্তির জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তিনি ফোন করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রাজ্যের দুই প্রধানের কথোপকোথনের সময় রাজ্যপাল তাঁকে ফোন করে হুমকি দেন বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। বিজেপি নেতাদের উসকানিতেই তিনি ফোনে হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, রাজ্যপাল সবসময় একপক্ষ নিয়ে কথা বলেন। যে ভাষায় উনি কথা বলেন, তা চূড়ান্ত অপমানকর। আমরা তো চাকরবাকর নই। কেন তিনি ওই ভাষায় কথা বলবেন? একজন রাজ্যপাল কথা বলেন বিজেপি ব্লক সভাপতির ভাষায়। এদিন ফোন করে এমন কথা তাঁকে বলা হয়েছে যাতে তিনি চূড়ান্ত অসম্মানিত বোধ করেছেন। তিনি দাবি করেন, ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করছি, এমন অসম্মানিত কোনওদিন হননি।
মমতা এদিন রাজ্যপালকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ' আমি রাজ্যপাল দয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসিনি। আমি মানুষের ভোটে জিতে ক্ষমতা এসেছি। বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসে কেউই আমায় দয়া করেনি। তাই আমার সঙ্গে এভাবে কথা বলবেন না।'
বসিরহাটের অশান্তি প্রসঙ্গে মমতা বলেন, 'ফেসবুকে পোস্ট করে দাঙ্গা লাগানো হয়েছে। হিন্দু বজরং দলের নাম করে বিজেপি এই কাজ করেছে। কান থাকলে শুনুন। চোখ থাকলে দেখুন। ফেসবুক প্রথমেই ব্লক করে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কটা ফেসবুক ব্লক করবে? ফেসবুকে কাউন্টার না করে রাস্তায় নেমেছে কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, 'পাঁচ-ছজন লোক হলে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু সব কমিউনিটি এক জায়গায় এলে পুলিশ কী করবে। তাই আমি ধৈর্ধ ধরেছি। দেখতে চেয়েছি পরিস্থিতি কোন দিকে যায়। কিন্তু সেই ধৈর্যকে দুর্বলতা ভাববেন না। আর আমাকে আইনশৃঙ্খলা শেখাতে আসবেন না'
এদিন রাজ্যপাল সম্বন্ধে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিবৃতির নিন্দা কেরন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, মুখমন্ত্রী তো বলেন পাহাড় হাসছে, জঙ্গলমহল হাসছে। এখন গোটা রাজ্যই কাঁদছে। মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি সামলাতে পারছেন না। রাজ্যপাল রাজ্যের সা্ংবিধানিক প্রধা্ন। তিনি আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নে কোনও কথা জিজ্ঞাসা করতেই পারেন। এতে অপমানের কী আছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে প্রশ্ন তোলেন আমাদেরও তো জানা উচিত রাজ্যপালের কোন কথায় উনি এত অপমানিত হলেন।